ভৈরব নদ বাঁচানোর দাবিতে শ্রমিক সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন

জাতীয়

কে এম আলীঃ

ভৈরব নদ বাঁচাও – শ্রমিক বাঁচাও এই শ্লোগানে সংবাদ সম্মেলন করেছে অভয়নগর – পৌর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন।
গতকাল সোমবার সকালে শ্রমিক ইউনিয়ন প্রাঙ্গণে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অব্যাহত দখল, দূষণ, অপরিকল্পিত নদী খনন, বিআইডব্লিউটিএর উদাসীনতা, অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণ ও ঘাট মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতায় যৌবন হারানো ভৈরব নদকে
রক্ষায় এ সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ আমিনুর রহমান তার লিখিত বক্তব্য পাঠকালে বলেন,
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে অভয়নগর নোয়াপাড়া পৌর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছি। আপনারা জানেন, ৯০ দশকের শুরুতে নোয়াপাড়া শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠিত হয় নওয়াপাড়া নৌ বন্দর। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আমদানি কারক ও ব্যবসায়ীরা এসে নওয়াপাড়াকে আরো ব্যবসা সমৃদ্ধ শহর হিসেবে গড়ে তোলে।যার অন্যতম দাবিদার ভৈরব নদ। এই নদ ও ঘাট শ্রমিকদের বাঁচাতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। আপনারা জানেন নদী পথ রেলপথ ও সড়ক পথের সমন্বয়ে অন্যতম শিল্প ও বাণিজ্য শহর হিসাবে বিশ্ব দরবারে খ্যাতি অর্জন করেছেন নওয়াপাড়া নৌ বন্দর। রেল ও সড়ক পথের প্রসার ঘটলেও অবৈধ দখলদারিত্বের কারণে ভৈরব নদ ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে। ফলে স্রোতের গতিধারা পরিবর্তন হওয়ায় নদীর তলদেশে পলি দ্বারা ভরাট হতে শুরু করেছে। বন্যবাহী জাহাজ ও কার্গো চলাচলে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় লোড আনলোডে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে। যার কারনে অনেক আমদানীকারক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেছে। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, মজুদখালী খাল থেকে আফড়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার নওয়াপাড়া নৌ বন্দরের সীমান। এখানে বিআইডব্লিউটিএর ৯ টি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১২০ টি ছোট বড় ঘাট রয়েছে। যা থেকে সরকার প্রতিবছর শত শত কোটি টাকা রাজস্ব আদাই করে। এছাড়া ৪০ জন আমদানি কারক ও সহশ্রধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার সাথে জড়িত প্রায় ২৫ হাজার হ্যান্ডলিং শ্রমিক। অবৈধ দখল ও অপরিকল্পিত নদী খননের কারণে ভৈরব নদ আজ মৃত প্রায়। ফলে ২৫ হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবার অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এই ভৈরব নদ ও শ্রমিকদের বাঁচাতে অবিলম্বে ভৈরব নদের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে নদী খনন অব্যাহত রাখতে হবে। বন্দর এলাকায় নদীর দুই তীরে গাইডলাইন নির্মাণ করতে হবে। প্রতিটি ঘাটে নারী পুরুষ শ্রমিকদের জন্য নামাজের স্থান সহ পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘাটে কাজ চলাকালীন সময় কোন শ্রমিক দুর্ঘটনায় পতিত হলে ওই ঘাট মালিক এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করতে হবে। নদী দখল করে জেটি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উল্লেখিত দাবি বাস্তবায়িত হলে ভৈরব নদ বাঁচবে, বাঁচবে শ্রমিক, বাঁচতে দেশ ও দেশের অর্থনীতি। আপনারা অবগত আছেন, বর্ষা মৌসুম ছাড়া আমদানি কারকরা তাদের পণ্য নওয়াপাড়া নৌবন্দরে আনতে নানা প্রতিকূলতার শিকার হন। বর্ষা মৌসুম ছাড়া শ্রমিকদের কাজের জন্য জোয়ারের অপেক্ষা করতে হয়। ফলে প্রকৃত মজুরি না পেয়ে তাদের মানবতার জীবন যাপন করছে হয়। ঠিক তেমনি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অবিলম্বে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষিত দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে শ্রমিকরা রাজপথে নেমে আন্দোলন করতে বাধ্য হবে। শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিক শ্রমিক নেতা সহ সাধারণ শ্রমিকদের সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *