মহামারীর তিন বছর : করোনার অস্তিত্ব থাকলেও কেটেছে আতঙ্ক

জাতীয়

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। সে হিসেবে দেশে করোনা মহামারী শনাক্তের ৩ বছর পার হলো গতকাল বুধবার। তবে তিন বছর পর করোনায় মৃত্যুর খবর এখন আর খুব একটা পাওয়া যায় না। হাসপাতালগুলোয় করোনা পরীক্ষার ভিড় নেই। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১ শতাংশের নিচে। মহামারির আতঙ্কও আর তেমন নেই। অথচ তিন বছর আগে ২০২০ সালের এ সময়ে পরিস্থিতি ছিল ঠিক বিপরীত।

সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে এ পর্যন্ত ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৮৬৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৪৪৫ জন। রোগী শনাক্তের তুলনায় মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪৪।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাম্প্রতিক কালে একাধিক অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন, বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে মহামারি মোকাবিলা করতে পেরেছে। সরকার ঠিক সময়ে ঠিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে এবং দক্ষতার সঙ্গে তা বাস্তবায়ন করেছে।
তবে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) অনুষ্ঠিত সেমিনারে একটি গবেষণা ফলাফল উপস্থাপনায় বলা হয়, মহামারি মোকাবিলার কাজে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি ছিল। মহামারির এক বছর পরও বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালে আইসিইউ, ভেন্টিলেটর, চিকিৎসাসেবার প্রস্তুতিতে কমতি দেখা গেছে। গবেষণাটি হয়েছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএমআরসির অর্থায়নে।

মহামারির শুরুতে করোনা পরীক্ষার সুযোগ ছিল শুধু আইইডিসিআরে। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অনেক সময় দেখা গেছে কেন্দ্রগুলোয় পরীক্ষা করানোর জন্য মানুষের দীর্ঘ সারি। এখন দেশে ৮৮৫টি কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষার সুযোগ আছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ১৬২টি, জিন এক্সপার্ট ৫৭টি ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ৬৬৬টি। যে কেউ সহজে এখন করোনা পরীক্ষা করাতে পারেন।

শুরুতে হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে মানুষের মনে দ্বিধা ছিল। সরকারি কোন হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যাবে, হাসপাতালে গেলে শয্যা পাওয়া যাবে কি না-এ রকম নানা সংশয় দেশজুড়ে ছিল। এখন আর তা নেই। একটি পর্যায়ে সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা শুরু হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বেসরকারি হাসপাতাল। সব মিলে শুধু করোনা রোগীর জন্য সাড়ে ১২ হাজারের বেশি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসাব বলছে, দেশের ৮৯ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ, ৮১ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ এবং ৪০ শতাংশ মানুষ তৃতীয় ডোজ করোনার টিকা পেয়েছেন। আর সরকারের হিসাব বলছে, প্রায় ৩২ লাখ মানুষ করোনার চতুর্থ ডোজ বা দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ পেয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *