রাসেল আহমদ,(গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি)
কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাও ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিক মিয়ার পুত্র প্রবাসী আলখাছ মিয়া (৪৮) অবৈধ পথে ইউরোপের রোমানিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে কয়েকজন যুবকের কাছ থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিন টিলাগাও ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, আলখাছ এক সময় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। এছাড়া সে টিলাগাও প্রবাসী সামাজিক সংগঠনের সভাপতি ও হাজীপুর প্রবাসী সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতির পরিচয় দিয়ে থাকে। তারপর সে বিভিন্নভাবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। জামায়াতের সাথে সংপৃক্ত থাকার কারণে সে লুকিয়ে আরব আমিরাতে আসে। পরবর্তীতে সে অবৈধ পথে ইউরোপের রোমানিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখানো শুরু করে সেখানে থাকা প্রবাসীদের। এর মধ্যে সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ৫ নং উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রহিম জুয়েল এর কাছ থেকে তার ছোট ভাইকে রোমানিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ২০২২ সালের জুন – জুলাই- আগস্ট – সেপ্টেম্বর মাসে ক্রমান্বয়ে ৬,২০১ দিরহাম নেয়৷ যা বাংলাদেশের অর্থে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে ওয়ার্ক পারমিট বাবত প্রথম ধাপে ৩০০০ দিরহাম সহ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্যও টাকা নেয়। ভুক্তভোগী জুয়েল জানান, আমার ভাইকে প্রবাসে পাঠানো দূরের কথা এখন সে আমার নিকট হইতে অর্থ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে আসছে। এমনকি আমাকে প্রবাসে অবস্থানরত অবস্থায় প্রাণ নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি যখনই বলি ভাই আমার ভাইয়ের হয় বিদেশের ব্যবস্থা করে দেন অন্যথায় আমার টাকা ফেরত দেন তখন সে আমাকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়। প্রায় এক বছর ধরে আমি প্রবাসে আলখাছের হুমকি উপেক্ষা করে দুর্লভ জীবনযাপন করছি৷
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী জুয়েল। মামলা নং- জি আর এস ট্রাকিং নং ১০০।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গেলে জানা যায়, বিগত চলমান আন্দোলনে উন্ডির মাধ্যমে সিলেটের সমাবেশে অর্থ পাঠিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দূতাবাসের এক কর্মকর্তার মাধ্যমে জানা যায় আলখাছ তার মানব পাচার চক্রের পাশাপাশি সে দেশে চলমান অস্থিরতা নিয়ে অর্থের যোগানদাতা হিসেবে কয়েকজন প্রবাসীর কাছে চাদা দাবি করে। ভুক্তভোগী অনেকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিএনপি জামায়াতের সাথে যোগাযোগ রয়েছে আলখাছের এই বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেন সংবাদ লেখককে।
এ বিষয়ে আলখাছের সাথে তার আরব আমিরাতে নাম্বারে যোগাযোগ করলে, অর্থ লেনদেন এর কথা স্বীকার করে এবং সে যে রোমানিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে অর্থ নেয় তা জানা যায় সরাসরি বিকল্প পদ্ধতিতে তার সাথে যোগাযোগ করার পর সে জানায় সে রোমানিয়া মানুষ পাঠাতে পারবে।
দালালচক্রের মূল হোতা আলখাছের বিষয় নিয়ে তার পিতা মাতা সহ আর সহধর্মিণীর বিরুদ্ধে মামলা করার কথা জানান জুয়েল। এর মূল কারণ আলখাছ দেশে অর্থ লেনদেন করত তার পিতা রফিক মিয়া ও তার ভাই পরিচয় দেওয়া দুইজন ব্যক্তির মাধ্যমে।
এমনকি আরব আমিরাত প্রবাসী এক আওয়ামী লীগের নেতা শামীম হাসান জানান, রফিকের পুত্র আলখাছ বিএনপির অর্থের যোগানদাতা পাশাপাশি তিনি মানবপাচারের মূল হোতা হিসেবে পরিচিত। তার এমন কর্মের জন্য লজ্জিত কুলাউড়াবাসী বলে জানান তিনি।
শেয়ার করুন