মাসে কত টাকা আয় করলে কোরবানি ওয়াজিব

ইসলাম ও জীবন

 

কোরবানি মুসলিমদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের উপর কোরবানি ওয়াজিব। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীর যুগেই কোরবানি পালিত হয়েছে। আল্লাহ ও তার রাসুলের শর্তহীন আনুগত্য, ত্যাগ ও বিসর্জনের শিক্ষাও আছে কোরবানিতে। সেই কাঙ্খিত দিবসটি আর মাত্র কদিন পরে।

কারো জন্য কোরবানি ওয়াজিব হওয়া কিংবা সুন্নত হওয়ার জন্য কোরবানিকারীকে ধনী হওয়া শর্ত। অর্থাৎ তার নিজের খরচপাতি ও সে যাদের খরচ চালায় তাদের খরচপাতির অতিরিক্ত তার কাছে কোরবানি করার অর্থ থাকা। অতএব, কোনো মুসলমানের যদি মাসিক বেতন বা আয় থাকে এবং এ বেতন দিয়ে তার খরচ চলে যায়, এর অতিরিক্ত তার কাছে কোরবানির পশু কেনার অর্থ থাকে তাহলে সে ব্যক্তি কর্তৃক কোরবানি দেওয়ার শরয়ি বিধান রয়েছে।

কোরবানি করার জন্য ধনী হওয়া শর্ত মর্মে দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে অথচ সে কোরবানি করেনি সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।” [সুনানে ইবনে মাজাহ (৩১২৩), আলবানী ‘সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন] এখানে সামর্থ্য দ্বারা উদ্দেশ্য ধনী হওয়া।

প্রতিটি পরিবারের পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়ার বিধান রয়েছে। দলিল হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “প্রতিটি পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর একটি কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব।” [মুসনাদে আহমাদ (২০২০৭)] ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে বলেন: হাদিসটির সনদ মজবুত। আলবানী ‘সহিহ সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে (২৭৮৮) হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন]

এ বিধানের ক্ষেত্রে পুরুষ বা নারীর কোনো ভেদ নেই। অতএব, কোনো নারী যদি একাকী বসবাস করেন কিংবা তার সন্তানদেরকে নিয়ে থাকেন তাহলে তাদেরকে কোরবানি করতে হবে।

আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা গ্রন্থে (৫/৮১) এসেছে- “কোরবানি ওয়াজিব হওয়া কিংবা সুন্নত হওয়ার জন্য পুরুষ হওয়া শর্ত নয়। কোরবানি পুরুষদের উপর যেমন ওয়াজিব হয় তেমনি নারীদের উপরও ওয়াজিব হয়। কারণ ওয়াজিব হওয়ার দলিলগুলো নর-নারী সবাইকে সমানভাবে শামিল করে।”

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *