মেধাবিকাশ বিদ্যালয়ে ছাড়পত্রের জন্যে হাজার টাকা দাবি

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরের মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয় (স্কুল শাখা) থেকে চলতি বছরে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পাস শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ছাড়পত্র (প্রশংসাপত্র) প্রদানের জন্য ১ হাজার ৬শ টাকা দাবির অভিযোগ ওঠেছে। তবে ১ হাজার ৬শ টাকা নয়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ বলছেন, অন্যান্য শ্রেণির জন্যে নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৩শ টাকা করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেধাবিকাশ (স্কুল শাখা) উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার ৪৩ জন শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণি পাস করে। অভিযোগ উঠেছে, পঞ্চম শ্রেণি পাস করা ওই সব শিক্ষার্থীর কয়েক অভিভাবক বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র (প্রশংসাপত্র) আনতে গেলে প্রধান শিক্ষক তাদের কাছে ১ হাজার ৬শ টাকা দাবি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, বানিয়াচংয়ের অন্য কোন স্কুলে ছাড়পত্র নেওয়ার সময় এভাবে এতো টাকা চাওয়া বা নেওয়া হয় না। বিদ্যালয়ে মাত্রাতিরিক্ত টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

এ ব্যাপারে মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত যারা ছাড়পত্র নিতে চায় তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ হাজার ৩শ টাকা করে নেওয়া হয়। এছাড়া স্কুল এন্ড হাইস্কুল হওয়া সত্ত্বেও কেন শিক্ষার্থীরা এই স্কুলে না থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছে এ কারণে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ চাওয়া হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে এখন পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণির কোন শিক্ষার্থী ছাড়পত্র নেয়নি।

উপজেলা সদরে অবস্থিত রায়েরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে টিসি পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক বা আইনি অভিভাবককে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা-মাতার নাম, বর্তমান বিদ্যালয়ের নাম, স্থানান্তরের কারণ ইত্যাদি তথ্য উল্লেখ করতে হবে। প্রধান শিক্ষক আবেদনপত্র যাচাই করে শিক্ষার্থীর জন্য টিসি ইস্যু করবেন। আমরা ছাড়পত্র দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন টাকা নেই না। যথাযথ নিয়ম মেনে আবেদন করলে তারপরই টিসি দেওয়া হয়।

ডা. ইলিয়াছ একাডেমির প্রধান শিক্ষক হেমায়েত আলী খান বলেন, আমরা ছাড়পত্র দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ দুইশ থেকে তিনশ টাকা করে নিই। ছাড়পত্র বাবদ তার চেয়ে বেশি নেওয়া যায় না। আর এটার কোন ধরাবাঁধা নিয়মও নাই।

বানিয়াচং মেধাবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান খানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুল ইসলাম বলেন, ছাড়পত্র নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোন সরকারি নির্দেশনা নেই। তবে ক্ষেত্র বিশেষে সেশন ফি দেখিয়ে নিতে পারে কিন্তু এটিও স্কুলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এর বাইরে আপাতত আমার কোন কিছু বলার নাই। তারপরও আমি বিষয়টা খতিয়ে দেখব।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *