মে দিবসের কর্মসূচি শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা ও শ্রমিক হয়রানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ

সিলেট

মহান মে দিবসের কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা ও হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটি।

৪মে (শনিবার) বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার ও যুগ্ন সম্পাদক রমজান আলী পটু স্বাক্ষরিত সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস মহান মে দিবসের কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ সুরমা রেস্তোঁরা মালিক সমিতি ও কতিপয় অসাধু মালিকদের ষড়যন্ত্রের শিকার হন সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। অথচ গণমাধ্যমে ঘটনার পর পর মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের প্রকাশিত বক্তব্যে জানা যায় হোটেল ভাংচুরের ঘটনায় কোনো হোটেল শ্রমিক জড়িত নয়, যারা ভাংচুর করেছে তারা কোনো হোটেলের শ্রমিক নয়। কিন্তু পরদিন পুলিশ হোটেল শ্রমিক নেতাদেরকে কর্মরত অবস্থায় প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করে। এমন কি পুলিশী হয়রানিতে মামলার এজহার বহিঃভূত হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের ক্রিড়া সম্পাদক সাগর মিয়াকে কর্মরত অবস্থায় প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশী হয়রানির ভয়ে অনেক হোটেল শ্রমিক কাজে যোগ দিতে পারছেন না। পুলিশী হয়রানির কারণে নিরিহ শ্রমিকদের রুটি রুজী অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

নেতৃবৃন্দ এসকল কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৩৮ বছর আগে শ্রমিক শ্রেণি রক্তঝরা সংগ্রামের মাধ্যমে ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের দাবি আদায় করেছিলেন। সেদিনও শ্রমিক শ্রেণির উপর মালিক গোষ্ঠীর পেটুয়াবাহিনী নির্মম অত্যাচার চালায়। আর আজ এত বছর পর ৮ ঘন্টা কাজ ও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত মহান মে দিবসের ছুটির দাবিতে আন্দোলনকে দমন করতে মালিক শ্রেণি ও তাদের পেটুয়া বাহিনী যে গ্রেফতার ও হয়রানি চালাচ্ছে তাতে মে দিবসের আন্দোলনেকে ¯্ররণ করিয়ে দিচ্ছে। তবে সেসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মালিক শ্রেণিকে শ্রমিক শ্রেণির কাছে মাথানত করতে হয়েছিল।

সিলেট সহ সারাদেশে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতৃত্বে একের পর এক সংগঠন তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্ছার হচ্ছে এবং তাদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করে চলছে। এতে সারা দেশের ন্যায় সিলেটের হোটেল মালিকরা মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও পুলিশী হয়রানির মাধ্যমে শ্রমিক আন্দোলন দমন করতে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে লিপ্ত। গত ১ মে মহান মে দিবসের কর্মসূচী সফল করার লক্ষ্যে সকল শ্রমিকদের খানা-দানা স্ববেতনে ছুটির দাবিতে সিলেটের সকল রেস্টুরেন্ট মালিকদের চিঠি প্রদান করা হয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের ৯৯ শতাংস হোটেল-রেস্টুরেন্টের শ্রমিকরা ছুটিতে থাকলেও গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের মালিক অত্যান্ত সু-পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত বাস্তবায়নের মানসে প্রতিষ্ঠান খোলা রাখেন। মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের ভাষ্য অনুযায়ি যে সময় হোটেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে তখন অর্থাৎ সকাল ১০টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কোর্ট পয়েন্টের শ্রমিক সমাবেশ চলাকালে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ শ্রমিকরা সমাবেশ সফল করতে ভূমিকা রাখেন, যা বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের একমাত্র পথ হচ্ছে আন্দোলন সংগ্রাম। অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মালিকদের সকল ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করতে হবে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। মে দিবসে শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিনে মালিকদের এ ন্যক্কারজনক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মে দিবসের বিপ্লবী চেতনাকে ধারণ করে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করার মধ্য দিয়ে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *