ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সঙ্গে দারুণ এক উচ্চতায় বসেন নেইমার। স্পর্শ করেন ব্রাজিলের হয়ে পেলের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। অসাধারণ এই কীর্তির জন্য উত্তরসূরিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা পেলে।
তিনি আশাবাদী, আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবেন পিএসজি ফরোয়ার্ড।
৭৫ গোল নিয়ে কাতার বিশ্বকাপ খেলতে নামা নেইমার সার্বিয়ার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এরপর মিস করেন সুইজারল্যান্ড ও ক্যামেরুনের বিপক্ষে ম্যাচ। শেষ ষোলোয় দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে একটি গোল করেন ৩০ বছর বয়সী এই ফুটবলার।আর শেষ আটের লড়াইয়ে শুক্রবার ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে গোলশুন্য সমতার পর ১০৬তম মিনিটে ব্রাজিলকে লিড এনে দেন নেইমার।
এরই সঙ্গে তিনি পাশে বসেন পেলের, আন্তর্জাতিক ফুটবলে দুজনেরই গোল এখন সমান ৭৭টি। পেলে ৭৭ গোল করেছিলেন ৯২ ম্যাচে, নেইমারের লাগল ১২৪ ম্যাচ।ব্যক্তিগত অর্জনের মঞ্চে শেষটা অবশ্য সুখকর হয়নি নেইমারের। ১১৭তম মিনিটে ম্যাচে সমতা আনা ক্রোয়েশিয়া পরে টাইব্রেকারে জেতে ৪-২ গোলে।
ব্রাজিল হেরে যাওয়ায় অন্য সবার মতো হতাশ গ্রেট পেলেও। তবে নেইমারকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি তিনি। ইনস্টাগ্রাম পোস্ট আশা প্রকাশ করেছেন, এভাবেই পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে যাবেন নেইমার।
“আমি তোমাকে বেড়ে উঠতে দেখেছি, প্রতিদিন তোমার জন্য গলা ফাটিয়েছি এবং এবার ব্রাজিলের হয়ে আমার সমান গোল সংখ্যায় পৌঁছানোর জন্য আমি তোমাকে অভিনন্দন জানাতে পারি। আমরা দুজনই জানি যে, এটি কেবল একটি সংখ্যা নয়, আরও বেশি কিছু।”
“অ্যাথলেট হিসাবে আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো অনুপ্রাণিত করা। আমাদের আজকের সতীর্থদের, পরবর্তী প্রজন্মকে এবং সর্বোপরি, যারা আমাদের খেলাটিকে ভালোবাসে তাদের অনুপ্রাণিত করা। দুর্ভাগ্যবশত এটি আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের দিন নয়।”১৯৭১ সালে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে নিজের শেষ গোলটি করেছিলেন পেলে। ৫১ বছর পর তাকে স্পর্শ করলেন নেইমার।
৮২ বছর বয়সী পেলে মনে করেন, নেইমার যা করেছেন তা বলে দেয় যে খেলোয়াড় হিসেবে তিনি কতটা উঁচুমানের।“আমার রেকর্ডটা প্রায় ৫০ বছর আগে হয়েছিল এবং এখন পর্যন্ত কেউ এটির কাছাকাছিও যেতে পারেনি। তুমি পৌঁছেছো। এটিই বলে দেয় যে তোমার অর্জন কতটা দুর্দান্ত।”
অন্ত্রের ক্যান্সারের সঙ্গে অনেক দিন ধরে লড়াই করছেন পেলে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ধরা পড়ে তার এই সমস্যা। অস্ত্রোপচারের পর এখন চলছে নিয়মিত চিকিৎসা। যার অংশ হিসেবে গত ৩০ নভেম্বর থেকে থেকে সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে আছেন তিনি। নতুন করে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় চলছে সেই চিকিৎসা।