শফিক চৌধুরী মন্ত্রী হওয়ার খবরে সিলেটে আনন্দ উল্লাস

সিলেট

২৪ ঘন্টার রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাত সিলেট-২ (ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন। তাঁর প্রতিমন্ত্রী হওয়ার খবরে সিলেটসহ তার নির্বাচনি এলাকায় বইছে আনন্দের বন্যা।
শফিকুর রহমান প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার খবরে সিলেটের ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথের ১ পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণের মাঝে দেখা দিয়েছে আনন্দ, উচ্ছ্বাস।

সংসদীয় (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে ডুবানো নৌকা ভাসিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। গত রবিবার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের তিনি ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
অন্যান্য এমপির সঙ্গে সকালে বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ গ্রহণ করেন শফিক চৌধুরীও। শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি পেলেন সুখবর। মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন ২৪ ঘণ্টার রাজনীতিবিদ হিসেবে সুখ্যাতি পাওয়া এই আওয়ামী লীগ নেতা।
বুধবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শফিক চৌধুরী মন্ত্রী হচ্ছেন- এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সন্ধ্যার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব নতুন মন্ত্রী শপথ নিতে যাচ্ছেন সেই তালিকায় শফিক চৌধুরীর নাম থাকায় দলীয় নেতাকর্মীসহ এ সংসদীয় আসনের আম জনতার মাঝে উৎফুল্লতা দেখা যায়। পরে নতুন মন্ত্রিসভার নামের তালিকায় তার নাম বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হওয়ায় এ সংসদীয় আসনের সর্বস্তরের মানুষ আনন্দের জোয়ারে ভাসছে।
প্রতিমন্ত্রী করায় আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোন পেয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘কোন মন্ত্রণালয় মিলছে তা এখনো জানানো হয়নি। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে প্রথমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়াবেন। এরপর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দফতর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’
এর আগে ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সে সময়ের প্রভাবশালী নেতা এম ইলিয়াস আলীকে হারিয়ে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন শফিক।

শফিকুর রহমান চৌধুরী ‘কামব্যাক’ করায় বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। সেই আনন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে তিনিও নিজেকে মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিবেন বলে এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহণের পর শফিকুর রহমান চৌধুরী এক প্রতিক্রিয়ায় সিলেটভিউ-কে বলেন, “প্রথমেই জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা, তিনি আমাকে নৌকা না দিলে বিজয় আসতো না। দীর্ঘ ১০ বছর আমার নির্বাচনি এলাকার মানুষ উন্নয়নবঞ্চিত ছিলেন নৌকার প্রার্থী না থাকায়। তবে এবার নৌকা ফিরে আসায় বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরবাসীর কাঙ্খিত উন্নয়ন হবে। স্থানীয় নেতাকর্মী নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী ৫ বছর নিবিষ্টচিত্তে আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাবো।”

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ওসমানীনগরের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক রবিন পাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী আদর্শের সৎ, কর্মঠ ও জনপ্রিয় এ নেতা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখের ভাগিদার। শফিক চৌধুরী  সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আস্থা ও ভরসার প্রতীক এবং শেষ ঠিকানায় পরিণত হয়েছেন। দীর্ঘকাল ধরে দলের প্রতি তিনি সর্বস্ব দিয়ে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ততা অর্জন করেছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগে কাজ করা শফিকুর রহমান বিলেতের মায়া ত্যাগ করে সিলেটের রাজনীতিতে সক্রিয় হন ২০০৮ সালে। পরের বছরেই সিলেট-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাজিমাত করেন। স্থানীয় রাজনীতিতে বিশ্বস্ত নেতা হয়ে উঠায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে মূল্যায়ন করে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করেন। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পান তিনি।
দেশে থিতু হওয়ার পর থেকেই দলীয় নেতাকর্মী, সব শ্রেণি-পেশা এবং সাধারণ মানুষের জন্য শফিক চৌধুরীর দরজা সবসময় উন্মুক্ত ছিলো। যে কারণে তিনি ‘সিলেটের চব্বিশ ঘন্টার রাজনীতিবিদ’ হিসেবে সুখ্যাতি পান। তিনি ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *