ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগানো হয়েছিলো ৭২টি সিসিটিভি ক্যামেরা। তবে এরমধ্যে ৫৩টি ক্যামেরাই নানা কারণে বিকল হয়ে আছে।
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী মো. বুলবুল আহমেদ হত্যার পর থেকেই এই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে নানান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এ অবস্থায় জানা গেলো বেশিরভাগ সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল হয়ে আছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিকল হওয়া ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) সংস্কারের কাজ শুরু করেছে ।
ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎকর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে ছিঁড়ে যাওয়া ফাইবার অপটিক কেব্ল জোড়া দেওয়ার পাশাপাশি সুইস বোর্ড ও ক্যামেরার অভ্যন্তরের ত্রুটি নির্ণয় করেন। পরে তারা ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা, ফাইবার অপটিক কেব্ল ও যন্ত্রাংশ মেরামতের কাজ করেন। দু-এক দিনের মধ্যেই বিকল হওয়া ক্যামেরাগুলো সচল হবে বলে সংস্কারকাজে নিয়োজিত কর্মীরা জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, ক্যাম্পাসে এখন ৭২টি সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। তবে ৫৩টি ক্যামেরা যথাযথ স্থানে থাকলেও বিকল হয়ে আছে। বৃষ্টির পানি, বজ্রপাত ও পিঁপড়ার কারণে ফাইবার অপটিক কেব্লের বিভিন্ন অংশ নষ্ট হওয়ার ফলে ক্যামেরায় ধারণ করা তথ্য মনিটরে দেখা যায় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল বলেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা আরও জোরদার এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করেছে। বিকল সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে আরও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি সড়কবাতি লাগিয়ে পর্যাপ্ত আলোরও ব্যবস্থা করা হবে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে গাজী-কালু টিলা লাগোয়া নিউজিল্যান্ড এলাকায় বুলবুল ছুরিকাহত হন। পরে তাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রাতেই সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন। পরে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুলবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার নন্দীপাড়া গ্রামে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ পরান হলের দোতলার ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
বুলবুলের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সোমবার রাত থেকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশের পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় ক্যাম্পাসের ভেতরে বহিরাগতদের দ্বারা শিক্ষার্থী হত্যায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে।
শেয়ার করুন