মাঘের খুব কাছাকাছি দেশ। শুক্রবার থেকে জানান দিলো যেন সেই বার্তা। পৌষের শেষভাগে শীতে কাঁপছে সিলেট। হিম হাওয়ায় কাঁপছে গ্রাম থেকে নগর। কাঁপছে পুরো দেশও।
কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। সকালও ছিল কুয়াশার চাদরে ঢাকা। এরইমধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাল, এই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে, আর হতে পারে বৃষ্টিও।
সিলেটে ভোরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাতভর পড়া কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথগুলো। গাছের পাতা, আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশির বিন্দু। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কাজের সন্ধানে ছুটছে কর্মজীবী মানুষরা। তবে শহরে অন্যান্য সময়ের চেয়ে লোক সমাগম কম।
শীত বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। গবাদিপশুরাও ঠাণ্ডায় কষ্ট পাচ্ছে। এ প্রাণীগুলো শীতজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ঠাণ্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় চলাফেরায় সবাইকে সাবধান হতে হবে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না।
সিলেটে শীত বাড়ার সাথে সাথে গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। বেড়েছে বেচাকেনা। রাস্তার পাশে ছিন্নমূল মানুষকে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যায়।
শুক্রবার সিলেটের শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সিলেট সিটিতে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলি ও চুয়াডাঙ্গায়, ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী ওমর তালুকদার জানান, সিলেটের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। আগামী দুইদিন শীত একটু বাড়বে। প্রকৃতিতে থাকবে শীতের সাথে হালকা বাতাস।
এদিকে, আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলেছেন, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার সংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহণ এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
ওমর ফারুক জানান, কিশোরগঞ্জ, পাবনা, দিনাজপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
শেয়ার করুন