সম্পদের লোভে নিজ পিতাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন তারই জন্মদেয়া তিন সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার অভিজাত বনানী এলাকায়।
জানা গেছে, বনানীর ২ নাম্বার রোডের ২৯৮ নাম্বার প্লটে স্ত্রী নাজনীন জাহান ইতি ও তিন সন্তান বাহাউদ্দীন ইভান,নবীন হোসেন ও রবীন হোসেন কে নিয়ে বাস করতেন বোরহান উদ্দীন। ২০১০ সালের দিকে বড় ছেলে ইভান বিয়ে করেন কথিত টিকটকার পুরান ঢাকার মেয়ে টুম্পাকে। এর পর থেকেই বোরহানের সংসারে নেমে আসে কালো মেঘের ছায়া। একে একে বোরহানের তিন সন্তানকে কব্জায় নিয়ে নেয় টুম্পা ও তার ছোটবোন রূম্পা। সারাক্ষণ টিকটক, লাইকি ও ফেইজবুক নিয়ে মেতে থাকা টুম্পা বৃদ্ধ শশুর শাশুড়ীর উপর শুরু করে অমানবিকতা নির্যাতন। টুম্পার প্ররোচনায় নিজ জন্মধাত্রী মায়ের বিরুদ্ধে পরকিয়া সহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরী করেন পুত্র ইভান। আর এতে রাগে, ক্ষোভে বোরহানকে তালাক দিয়ে সুদূর আমেরিকায় পারি জমান বোরহানের স্ত্রী নাজনীন।
বোরহান উদ্দীন বলেন, আমার নিজ হাতে গড়া বাড়ি থেকে আমাকেই তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বনানীর ২ নাম্বার রোডে আমার সুবিশাল মার্কেট সেখানেও যেতে পারি না। মার্কেটের সামনে গেলে পুত্রবধূ টুম্পা আমাকে জুতা দিয়ে পিটায়। আমার ম্যানেজার বাবু এখন তাদের সাথে মিশে আমাকে মারধর করে। মার্কেট থেকে প্রায় ১০লাখ টাকা ভাড়া আসে যার পুরোটাকাই আমার ছেলেরা নিয়ে যায় আর আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুড়ি। আমার ছেলের বউ ৯৯৯ এ ফোন করে বনানী থানা থেকে পুলিশ এনে আমাকে মাইরা বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়। আমি বনানী থানায় জিডি করতে চাইলে ওসি জিডি না নিয়া আমারে থানা থেকে বের করে দেয়।
এবিষয়ে বনানী থানার ওসি নুরে আযম কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়।
অভিযোগের বিষয়ে বোরহানের পুত্রবধু টুম্পা বলেন, এই বাড়ি আমার ফুফু শাশুড়ীর আমরা তার বাড়িতে থাকি, আর আপনারা এত বেশি করেন কেন আমার কোন ছবি প্রকাশ করলে খবর আছে,
টুম্মা হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত হয় নি এক রিপোর্টারের বিরুদ্ধে বনানী থানায় জিডি করা হয় যার জিডি নং ১১৭০/১৯/১৯/২০২২
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চায়নি বোরহানের বড় ছেলে ইভান
তবে বোরহানের মেঝ ছেকে নবীন হোসেন বলেন আমরা তার বাড়ি থাকি না।
তবে বোরহানের বড় বোন বলেন এই বাড়ি আমি আমার ভাইকে দিয়েছি তার সন্তানদের না,যেখানে আমার ভাই থাকতে পারে না সেখানে তার ছেলেরা থাকে কিভাবে।
উল্লেখ্য বোরহানের বড় ছেলে ইভান ২০১৭ সালে অভিনেত্রী ধর্ষণ মামলার আসামী। তখন র্যাবের হাতে গ্রেফতার প্রতারনা, মাদক বিক্রি সহ নানা অভিযোগ আছে র্যাবের কাছে।
বোরহানের অভিযোগ বড় ছেলের স্ত্রী টুম্পার সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে মেঝ ছেলে নবীনের আর ছোট ছেলে রবীন রাত্রী যাপন করে টুম্পার ছোট বোন রুম্পার সাথে। মূলত এতে বাধা দিলেই বোরহান ও তার স্ত্রীর উপর অত্যাচার করে টুম্পা।
এ বিষয়ে ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, থানায় গিয়ে আইনি সহায়তা না পাওয়া আইনের লংঘন, এটি একটি অপরাধ। মূলত অপরাধীকে সুরক্ষা দিতে তার জিডি নেয়া হয়নি। তাই এটি ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।
আর মানবাধিকারের আইন ও শালিশ শাখার পরিচালক আশরাফুল আলম মনে করেন পিতার উপর সন্তানদের এমন অমানবিক আচরণ মানবাধিকার লংঘন। এদের আইনের আওতায় আনা উচিত।