‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ সেজে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের আবাসিক হলগুলোতে তৎপর রয়েছে ছাত্রলীগকর্মীরা। এমন অভিযোগ ওঠেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে তারা হল দখলের নানা অপতৎপরতা শুরু করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন চারদিন ধরে প্রায় প্রতি রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরূপে আবাসিক হলগুলোতে ঢুকে বিভিন্ন মিটিংয়ের আয়োজন করছে ছাত্রলীগকর্মীরা। নেতাদের নির্দেশনায় ছাত্রলীগকর্মীরা এসব করছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
অপরদিকে, সরকার পতনের আন্দোলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সমন্বয়করা হলের সিট নিয়ে নতুন প্যারামিটার তৈরির পর নতুন করে শিক্ষার্থী হলগুলোতে উঠানো হবে বলে তারা প্রচারণা চালাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসন আসলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ প্যারামিটার নির্ধারণ করা হবে বলেও জানাচ্ছে তারা। তবে ইতোমধ্যে যারা হলে ওঠেছে তাদের বিষয়ে সমন্বয়ক টিমের কেউ অবগত নয় বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগে আরও জানা যাচ্ছে- নতুন নিয়ম-নীতির আদলে পূর্বে যারা হলে ছিল, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের র্যাগিং ও বুলিংয়ের শিকার এবং গণরুমে থেকে একটি সিট অর্জন করেছে- এরকম নানা মানবিক দুর্বলতার বিষয়কে সামনে নিয়ে এসে সহানুভূতি আদায় করে ছাত্রলীগকর্মীরা হল আঁকড়ে থাকতে চাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন মিটিংয়ে তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং এসব পোস্টে তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর পক্ষে ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা কমেন্ট করিয়ে যৌক্তিক দাবি বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ১০ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে উঠতে শুরু করেছে আন্দোলনে নীরব থাকা ছাত্রলীগকর্মীরা। তখন থেকে এসব ছাত্রলীগকর্মী হলে সংঘবদ্ধ হয়ে সিট আঁকড়ে ধরা নিয়ে নিয়মিতই আলোচনা ও পরামর্শ সভা করে যাচ্ছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সমন্বয়করা এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তাদের সাথে কোনো পরামর্শ না করেই ছাত্রলীগকর্মীরা এসব সভার আয়োজন করছেন বলে অভিযোগ সমন্বয়ক টিমের।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও শাবি শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়েছি আবাসিক হলে ছাত্রলীগের নেতাদের নির্দেশে যারা পূর্বে প্রোগ্রামে আসতো তারা নাকি সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সভার আয়োজন করছে। এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিথ্যা প্ররোচণা দিয়ে এসব সভায় অংশগ্রহণ করাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে হলের অভ্যন্তরীণ সভা করার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নি। এই কাজগুলো যারা করছে আমরা মনে করছি আন্দোলনের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ তারা এই কাজগুলো আমাদের অবগত করে করছে না।
তিনি বলেন, যারা আগে হলে দখলদারিত্বের রাজত্ব করে গেছেন, আমরা মনে করি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এবং তাদের উত্তরসূরী হয়ে এখন কিছু ছাত্র এসব কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে।
শেয়ার করুন