সিলেটে ড্রোন দিয়ে সার্ভে, বর্ষার পর সড়কে স্থায়ী মেরামত

সিলেট

সিলেট বিভাগে ভয়াল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সড়কের ক্ষত বেরিয়ে এসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়কে ড্রোন দিয়ে সার্ভে করতে চায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। এর মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হবে। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শনে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়া অবধি অপেক্ষা করবে সওজ। এরপর শুরু হবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক স্থায়ী মেরামতের কাজ।

জানা গেছে, গত জুন মাসের মধ্যভাগে সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ৯০ ভাগই তলিয়ে যায়। লাখ লাখ মানুষ চরম বিপাকে পড়েন। এখনও অনেক এলাকায় বন্যার পানি রয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এখনও আছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। প্রশাসনের হিসেবে সিলেট জেলাতেই প্রায় ৪১ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সওজ সূত্র জানায়, এবারের বন্যায় সড়ক-মহাসড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে সড়ক ভেঙে গেছে, দেবে গেছে। অনেক সড়কের কার্পেটিং ওঠে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের।

সওজের হিসাবে, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ফেনী ও কুড়িগ্রামে সওজের আওতাধীন ৪১টি সড়কের ৪৭২ দশমিক ২১ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে সিলেট বিভাগে এলজিইডির প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়ক-মহাসড়কের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জের জন্য পৃথক দুটি পরিদর্শন টিম গত বৃহস্পতিবার গঠন করেছে সওজ। এ টিম দুটি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের অবস্থা পরিদর্শন করে কতোটুকু মেরামত প্রয়োজন, কাজ কবে নাগাদ শুরু করা যাবে, প্রক্রিয়া কী হবে, কতো টাকা লাগতে পারে এসব বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে সাতদিনের মধ্যে জমা দেবে। এর বাইরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগেরও একটি মনিটরিং টিম কাজ করছে।

এ বিষয়ে সওজ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেক সড়ক থেকে এখনো পানি নেমে যায়নি। পুরোপুরি পানি নেমে যাওয়ার পর আমরা দেখব কী ধরনের মেরামত লাগবে। সে অনুযায়ী কাজ করা হবে। প্রাথমিক অবস্থায় যেগুলোর পানি নেমে গেছে এবং কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। তবে স্থায়ী মেরামতকাজ শুরু হবে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর।’

সওজ অধিদপ্তরের মেইনটেন্যান্স সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জিকরুল হাসান বলেন, ‘সড়কে পানি ওঠার পর বোঝা যায় না কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে হাঁটা যায় না। ফলে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো দেখার জন্য ড্রোনের মাধ্যমে সার্ভে করা হবে। ড্রোন দিয়ে দেখে একটা সঠিক অ্যাসেসমেন্ট করে দেখব কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এবং কী ধরনের কাজ করতে হবে। তারপর সড়কের স্থায়ী মেরামত শুরু করব।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *