রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সীমিত পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশব্যাপী লোড-শেডিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এলাকাভিত্তিক রুটিন করে নির্দিষ্ট সময়ে লোড-শেডিং দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৬ জুলাই) চুয়েট ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে এ নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী এসময়।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিলেটে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর আওতাধীন এলাকাগুলোতে লোড-শেডিংয়ের সময় নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে এর বাইরেও লোড-শেডিং হতে পারে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে দেওয়া চার্ট থেকে জানা যায়- সিলেট মহানগরীর শিবগঞ্জ, টিলাগড়, সবুজবাগ, সেনাপাড়া, হাতিমবাগ, লামাপাড়া ও রাজপাড়া এলাকায় বিকাল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
শাহজালাল উপশহরের ব্লক এ- বি- সি- ডি ও তেররতন এলাকায় দুপুর ১টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
শাহজালাল উপশহরের ব্লক এইচ- আই- জে- ই- এফ- জি ও সাদাটিকর এলাকায় রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
যতরপুর, মিরাবাজার, আগপাড়া ও ঝেরঝেরিপাড়া এলাকায় বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
সেনপাড়া, মজুমদারপাড়া, পূর্ব মিরাবাজার, দর্জিপাড়া, খারপাড়া এলাকায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
মেন্দিবাগ পয়েন্ট, ডুবুরিহাওর, নাইওরপুল, ধোপাদিঘীরপাড়, সোবাহনীঘাট ও ওসমানী জাদুঘর রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
মিরেরচক, পিরেরচক, মুক্তিরচক ও মুরাদপুর এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
হকার্স মার্কেট, কালীঘাট, আলী আমজাদ রোড, মহাজনপট্টি, মাছিমপুর ও ছড়ারপার এলাকায় রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
কুশিঘাট, নয়াবস্তি, টুলটিকর, মিরপাড়া, মেন্দিবাগ, সাদাটিকর, নোয়াগাও, শাপলাবাগ ও মেন্দিবাগ এলাকায় বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
চালিবন্দর, কাষ্টঘর, সোবহানীঘাট, বিশ্বরোড, জেলখানা, ওসমানী জাদুঘর ও পৌরমার্কেট (পৌরবিপনী) এলাকায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
কাজিটুলা, মানিকপীর মাজার, নয়াসড়ক, বারুতখানা, জেলরোড, হাওয়াপাড়া ও চারাদিঘীরপাড় এলাকায় রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
কুমারপাড়া, নাইওপুল, ধোপাদিঘীরপাড় ও ঝর্ণারপাড় এলাকায় দুপুর ১টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
বালুচর, আরামবাগ, আল-ইসলাহ, নতুনবাজার, গোপালটিলা, আলুরতল ও টিভি গেইট এলাকায় বেলা আড়াইটা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
রায়নগর, ঝরর্ণারপাড়, দর্জিবন, বসুন্ধরা, খরাদিপাড়া, দপ্তরিপাড়া ও আগপাড়া এলাকায় বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লোড-শেডিং হবে।
লোড-শেডিংয়ের সময় নির্ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন সিলেটভিউ-কে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এলাকাভিত্তিক প্রাথমিক একটি রুটিন করেছি। উৎপাদনে বেশি ঘাটতি না হলে আমরা চেষ্টা করবো এই রুটিন ফলো করতে। তবে ঘাটতি বেশি হলে এই সময়ের ব্যত্যয় ঘটতে পারে। অথবা ঘাটতি কম হলে তার চাইতেও কম সময় লোড-শেডিং হতে পারে।
গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের অনুরোধ জানিয়ে শামস-ই আরেফিন বলেন, বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করে লোড-শেডিং অনেকটা এড়ানো সম্ভব। সিলেটে পিডিবি-২ দপ্তরের আওতায় ৬০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। যদি পিক আওয়ারে প্রত্যেকে গড়ে ১০০ ওয়াট বিদ্যুৎ বন্ধ রাখেন তাহলে মোট ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। ফলে লোড-শেডিংয়ের পরিমাণ কমে আসবে। এমতাবস্থায় সকল গ্রাহক পিক সময়ে অন্তত একটি ফ্যান এবং অপ্রয়োজনীয় বাতি বন্ধ রেখে জাতীয় সংকট মুহুর্তে সহযোগিতা করবেন- এটাই আশা করছি
শেয়ার করুন