সিলেটে বাড়ছে ডায়রিয়া ও জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ

সিলেট

স্টাফ রিপোর্টার : তীব্র গরমে সিলেট জুড়ে ডায়রিয়া ও ঠাণ্ডা জ¦রসহ নানা রোগের প্রাদুরভাব দেখা দিয়েছে। ঘরে ঘরে জ্বর, মাথাব্যথা ও পেঠের পীড়নে ভুগছে মানুষ। বৃষ্টিহীন সিলেটে মানুষ হা-পিত্যেস করছে কয়েকদিন থেকে। বৃষ্টির জন্য চাতকের মত আকাশ পানে এখন চেয়ে আছেন সিলেটের মানুষ। যেখানে এই মৌসুমে সিলেটে বানের পানি নিয়ে রব উঠার কথা সেখানে এবার সর্বত্র পানি শূন্যতা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা কয়েকদিনের গরমের তীব্রতায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ বিভাগের প্রায় সকল সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া ও ঠাণ্ডা-জ¦রের রোগী। সাথে হিট স্ট্রোকের চরম ঝুঁকিতে আছেন বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষ। গেল সপ্তাহে হিট স্ট্রোকে সিলেট নগরীতে ১ জন শ্রমজীবি ও মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে ২ জন চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে হিট স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যা।

এদিকে নগরীর ফার্মেসীগুলোতে হঠাৎ করেই ওরস্যালাইন, ডায়রিয়ার এবং জ¦র-সর্দি ও কাশির ওষুধ বিক্রি বেড়েছে বলে একাধিক ফার্মেসী মালিক জানিয়েছেন। তারা জানান, গত কয়েকদিনে ডায়রিয়া ও জ¦র-সর্দি-কাশির ওষুধ বিক্রি কমপক্ষে ৩ গুণ বেড়েছে। কিছু রোগী চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ফার্মেসীতে আসলেও প্রেসক্রিপশন ছাড়া এই ধরণের ওষুধের ক্রেতা তুলনামূলক বেশী।

এ ব্যাপারে সিলেটের ডেপুটী সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় শংকর দত্ত দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, টানা গরম পড়লে স্বাভাবিকভাবেই হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া, জ¦র-সর্দি-কাশির প্রকোপ কিছুটা বেড়ে থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। জেলা জুড়েই গরমজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হবে।

বিভিন্ন ফার্মেসীতে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ডায়রিয়া ও জ¦র-সর্দি-কাশির ওষুধ বিক্রির ব্যাপারে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কিছু রোগের নির্ধারিত ওষুধ থাকে। সেগুলো ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কিনে খেতে সমস্যা নেই। তবে এন্টিবায়েটিক এবং হিট স্ট্রোকজনিত রোগের ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। অন্যথায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার শঙ্কা থাকে।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, ঈদুল ফিতরের পর থেকেই হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের রোগীর চাপ বাড়ছে। বর্তমানে ২ হাজার ২০০ জনের অধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সাধারণত হাসপাতালে ২ হাজার রোগী চিকিৎসাধিন থাকেন।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে হিট স্ট্রোক, ডায়রিয়া ও সর্দি-জ¦র-কাশির কি পরিমাণ রোগী আছেন সেই হিসেবটা আলাদা নেই। তবে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বাড়ছে। একই সাথে হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রোগীর চাপ বাড়ছে। সাধারণত হাসপাতালে যেখানে ৩০০০-৩৫০০ রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নেন, সেইখানে বর্তমানে দৈনিক ৪ হাজারেরও বেশী রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *