স্ত্রীকে পিটিয়ে লাশ বানালেন সাবেক মন্ত্রী!

জাতীয়

নিজের স্ত্রীকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন কাজাখস্তানের একজন সাবেক মন্ত্রী। এ ঘটনার গা শিউরে উঠা একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। এটিই এখন পুরো দেশের টক অব দ্য কান্ট্রি।

জানাযায়, সাবেক ওই মন্ত্রী কুয়ানদিক বিশিমবায়েভের (৪৪) বিরুদ্ধে স্ত্রী সালতানাত নুকেনোভাকে (৩১) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। কুয়ানদিক বিশিমবায়েভ দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী। এ ঘটনা প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট তোকায়েভের জন্য একটি লিটমাস পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, তিনি সুষ্ঠু বিচার এবং সমতাভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নভেম্বরে কুয়ানদিক বিশিমবায়েভের এক আত্মীয়ের একটি রেস্তোরাঁয় মৃতদেহ পাওয়া যায় সালতানাত নুকেনোভার। সেখানে এই দম্পতি আগের রাত এবং পরের পুরো একটি দিন অতিবাহিত করেন।

এ নিয়ে সম্প্রতি আদালতে শুনানিতে কুয়ানদিক বিশিমবায়েভের ৮ ঘন্টার একটি ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। তাতে দেখা যায়, তিনি স্ত্রী নুকেনোভাকে প্রহার করছেন।

নজরদারিকারি একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তাকে লাথি ও ঘুষি মারছেন কুয়ানদিক বিশিমবায়েভ। তারপর তার চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান অন্য একটি রুমে। সেই রুমে কি হয়েছে, তা ক্যামেরা ধারণ করতে পারেনি। এক পর্যায়ে টয়লেটের ভিতরে লুকিয়ে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করেন নুকোনোভা। কিন্তু বিশিমবায়েভ টয়লেটের দরজা ভেঙে ফেলেন। তাকে টেনে বের করেন এবং অব্যাহতভাবে প্রহার করতে থাকেন।

প্রসিকিউটররা বলেছেন, এরপর তিনি তাকে টেনেহিঁচড়ে টয়লেট থেকে বের করেন। গলা ধরে টেনে নেন। এর ফলে অচেতন হয়ে পড়েন নুকোনোভা। তিনি মেঝেতে নেতিয়ে পড়েন। রক্তে ভিজে যায় মেঝে। এ পর্যায়ে বিশিমবায়েভ কাউকে ফোন করেন। তিনি তাকে আশ্বস্ত করেন। বলেন, তার স্ত্রী ঠিক হয়ে যাবেন। কিন্তু ১২ ঘন্টা পরে সেখানে এম্বুলেন্স উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলেই মেডিকেল স্টাফরা নুকোনোভাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রেনে রক্তক্ষরণের ফলে মারা গেছেন সালতানাত নুকোনোভা। তার নাকের একপাশের হাড় ভেঙে যায়। তারমুখে, মাথায়, বাহুতে এবং হাতে অসংখ্য থেঁতলানোর দাগ পাওয়া যায়। নির্যাতন এবং ভয়াবহ সহিংসতার অভিযোগ আনা হয়েছে বিশিমবায়েভের বিরুদ্ধে। যদি তিনি অভিযুক্ত হন তাহলে ২০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। এই বিচার প্রক্রিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ফলে বিষয়টি জনগণের আগ্রহের কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। দেশটির সম্পদশালী অভিজাতদের মধ্যে বিশিমবায়েভ অন্যতম। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে যদি তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাহলে কোনো না কোনো উপায়ে তিনি তা থেকে বেরিয়ে যাবেন। এর আগের এক মামলায়ও তাই ঘটেছে।

উল্লেখ্য, ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ২০১৭ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দেয়া হয়েছিল ১০ বছরের জেল। কিন্তু তিন বছরের কম সময়ের মধ্যেই তিনি বেরিয়ে আসেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *