হবিগঞ্জে ধানের ভালো ফলনেও কৃষকের নেই হাসির চিহ্ন

হবিগঞ্জ

হবিগনজ জেলা প্রতিনিধিঃ

হবিগঞ্জের হাওর অঞ্চলে চলছে ধান কাটার ভরা মৌসুম। ক্ষেত খলা মাঠ-ঘাট সবখানেই এখন কৃষকদের ব্যস্ততা। কোন কোন কৃষক যখন ক্ষেতে গিয়ে ধান কাটছেন তখন আবার কোন কোন কৃষক আবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গোলায় ধান তোলতে পার করছেন ব্যস্ত সময়। এমন দৃশ্য এখন জেলার সর্বত্র। তবে জেলায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হলেও দামের কারণে হাসি নেই কৃষকের মুখে। বাজারে সব কিছুর দামই যখন উর্ধ্বমুখী তখনও ধানের এমন দামে হতাশ কৃষকেরা। যদিও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর বলছেন বরাদ্ধ না আসায় এখনো জেলায় শুরু হয়নি সরকারিভাবে ধান-চাল কেনা।

জানা যায়, জেলায় এবার ১ লাখ ২২ হাজার হেক্টরেরও বেশি জায়গায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের ধান ছাড়া সবজাতের ধানেরই ফলন ও হয়েছে ভালো। ইতোমধ্যে হাওরে অর্ধেকেরও বেশি ধান কাটার কাজ শেষ। শ্রমিক কিংবা আধুনিক কম্বাইন্ড হারভেস্টার যে যে ভাবে পারছেন ফসল কেটে ঘরে তুলছেন। যা হাওড়ের একমাত্র এই ফসল কৃষকের সাড়া বছরের খোরাক। তবে খুশি নেই তারা। বলছেন সার, বীজ শ্রমিকসহ সব খরচের তুলনায় ধানের দাম কম। এজন্য সরকারের দিকে চেয়ে আছেন এসব কৃষক। কৃষকরা বলছেন উপযুক্ত দামে সরকার ধান কিনলে উপকৃত হবেন তারা।

লাখাই উপজেলার কৃষক সুজন কুমার শীল জানান, এক ক্ষের জমিতে যে পরিমান ধান পাওয়ায় আর যে পরিমান খরচ হয় সেই হিসেবে কোন লাভ থাকেনা কৃষকের। সারা বছর জমিতে শ্রম দিয়েও যদি লাভের মুখ দেখা না যায় তা হলে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালানো দায়। তাই সরকার যদি ন্যয্যমূল্য দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা শুরু করতো আমাদের জন্য ভালো হতো। কৃষক আলতাফ রহমান জানান, প্রতি মন ধান এখন কেনা বেচা হচ্ছে ৮শ থেকে সাড়ে ৮শত টাকায়। এ টাকায় ধান বিক্রি করলে আমাদের কোন লাভ থাকে না। কৃষক মুজাহিদ আলী জানান, আমরা কৃষক সারা বছর এ ধান বিক্রির টাকা দিয়েই আমাদের সংসার চালাতে হয়। কিন্তু বাজারে যখন সব কিছুর দাম উর্ধ্বমুখী তখনও ধানের দাম কম। তাই ধানের ন্যয্য দাম যদি সরকার আমাদের না দেয় তা হলে আমাদের পথে বসতে হবে।

এ বিষয়ে সিলেট বিভাগ অটোরাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি শংকর পাল জানান, অনেক কৃষকই ধান না শুকিয়ে বিক্রি করে দেন। যে কারণে তারা দাম কম পান। যদি শুকনো ধান বিক্রি করতে তা হলে ভালো দাম পেত তারা। হবিগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা চাই থোয়াই মার্মা জানান, সরকার ১ হাজার ২ টাকা মন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিলেও বরাদ্ধ না আসায় ধান কেনা শুরু হয়নি। বরাদ্ধ সাপেক্ষে শীঘ্রই ধান কেনা শুরু হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *