৪৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ

খেলাধুলা

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ৩০ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৩৯ রান করে স্বাগতিকরা। ডিএল মেথডে বাংলাদেশের লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ২৪৫ রান। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ২০০ রান করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন আনামুল হক বিজয়। আফিফ হোসেন করেন ৩৮ রান। এছাড়া তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান।

ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে আজ দফায় দফায় বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি। বেরসিক বৃষ্টির বাগড়ায় বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসে ৩০ ওভারে। ১৯.২ ওভারে যখন তৃতীয় ধাপে বৃষ্টি নামে, তখন নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১০৮ রান। বাংলাদেশের সুযোগ ছিল কিউইদের চাপে ফেলে স্কোরটা আরও কমের মধ্যে আটকে রাখা। কিন্তু প্রথম ১০০ রানে তুলতে ১০৯ বল খেলা নিউজিল্যান্ড শেষ ৭১ বলে স্কোরে জমা করেছে ১৩৯ রান। বৃষ্টি আইনে ম্যাচ জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৪৫ রান। ওভারপ্রতি রান তুলতে হবে ৮-এরও বেশি।

প্রথম ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের কাঁপুনি তুলে দিয়েছিলেন শরীফুল ইসলাম। একটু পর স্বাগতিকদের আরও কঠিন চাপে ফেলার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। ব্যক্তিগত ১৮ রানে টম লাথামের ক্যাচটা যদি হাতে জমা করতে পারতেন সৌম্য সরকার। জীবন পেয়ে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লাথাম ও নিউজিল্যান্ডকে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওপেনার উইল ইয়ংকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ১৭১ রানের দারুণ এক জুটি গড়েছেন লাথাম। তবে দ্রুত রান তুলে কিউই অধিনায়ক দলের স্কোর পৌঁছে দিয়েছেন ভালো অবস্থানে, কিন্তু শেষে পর্যন্ত ফিরেছেন সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে। ৯২ রানে আউট হয়ে যান লাথাম। তবে সেই ভুল করেননি ইয়ং। দেখেশুনে শেষ দিকে তাণ্ডব চালিয়ে খেলেছেন ১০৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস, যার কল্যাণে বাংলাদেশকে ২৪০ রানের লক্ষ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

সুযোগ পাওয়া সৌম্য বোলিংয়েও ছিলেন খরুচে। ৬ ওভারে দিয়েছেন ৬৩ রান। তাঁর সঙ্গে ৫ ওভারে ৫৩ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অথচ টস জিতে বোলিং নেওয়া বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল কী দুর্দান্তই না। প্রথম ওভারে শরীফুলের জোড়া আঘাত। চার হজম করে বোলিং শুরু করেন এই বাঁহাতি পেসার। দ্বিতীয় বলে প্রান্ত বদল করায় রাচিন রবীন্দ্র গিয়েছিলেন ব্যাটিং প্রান্তে। গুড লেংথের ডেলিভারি অফ স্টাম্পে লাইন ধরে রাখা বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি (০)। বিশ্বকাপে দারুণ সময় পার করে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে রীতিমতো ব্যর্থ হলেন এই ওপেনার।

সেই রাচিন আউট হওয়ার বলের মতোই ওভারের শেষ ডেলভারিটাও। বাড়তি বাউন্স, অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেংথের বল। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা নিকোলসের (০) ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় দ্বিতীয় স্লিপে এনামুল হক বিজয়ের হাতে। এরপর লাথাম-ইয়ংয়ের জুটি গতিপথ বদলে দিল।

এর আগে অবশ্য লাথামকে জীবন দিয়েছেন সৌম্য। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ১৮ রানের সময় বেঁচে যান কিউই অধিনায়ক। শরীরের থেকে বলের খানিকটা দূরত্ব থাকলেও ক্যাচ ছিল একেবারেই সহজ। কিন্তু দলে ফেরা সৌম্য বল হাতে জমাতে পারেননি। তারপর লাথাম খেলেছেন ৭৭ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ৯২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। পরে মিরাজের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টাইমিং মিস করে ব্যাট আর পা ছুঁয়ে স্টাম্পের লালবাতি জ্বলে লাথামের।

৮৪ বলে ১০৫ রানে ফেরেন ইয়ং। তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরির ইনিংসে মেরেছেন ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কার বাউন্ডারি। পরে বাংলাদেশ দ্রুত কয়েকটি উইকেট ফেরালেও ততক্ষণে নিউজিল্যান্ড চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেয়ে যায়। ১১ বলে ২২ রান আসে মার্ক চাপম্যানের ব্যাট থেকে। আর নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ হয় ৭ উইকেটে ২৩৯ রান।

ইউনিভার্সিটি ওভালে শান্ত-লাথামদের আগে বৃষ্টি শুরু করেছিল খেলা। স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে। তার আগে থেকেই ডানেডিনে বৃষ্টি। মাঠে নামার আগেই প্রথম ধাপে বৃষ্টি কেড়ে নেয় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট সময়।

খেলা শুরু হয় বেলা ১২টা ১০ মিনিট থেকে। সময় নষ্ট হওয়ায় ম্যাচ অফিসিয়ালরা বাধ্য হন ম্যাচের পরিধি কমাতে। ম্যাচ নেমে আসে ৪৬ ওভারে। ১৩.৫ ওভার খেলা হওয়ার পর আবারও বৃষ্টির দাপট। খেলা বন্ধ ছিল প্রায় ঘণ্টাখানেক। আরও ৬ ওভার কমানো হয় ম্যাচ, অর্থাৎ ৪০ ওভারে হওয়ার কথা ছিল একবার। ১৯.২ ওভার পর আবারও বৃষ্টি নামে। তখন নির্ধারণ হয় ৩০ ওভারের খেলা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *