ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনাগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় চলছে মাদকের অবাধ ছড়াছড়ি। মাদক ব্যবসায়ীরা বুক ফুলিয়ে উপজেলা সদরে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে। মাদকের অবাধ ছড়াছড়ির কারণে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মাদক। এতে বিপথে যাচ্ছে স্কুল কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। মাদকেরা টাকা যোগাড় করতে গিয়ে তারা চুরি, ছিনতাইয়ের মত মারাত্মক অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
জানা যায়, উপজেলার বঙ্গবন্ধু চত্বর, কলেজ রোড, উকিলপাড়া মোড়, বাহুটিয়াকান্দা মোড়, মহদীপুর-মেউহারী মোড়, পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই ব্রীজ সংলগ্ন এলাকা, বাদশাগঞ্জ গ্রামীণ টাওয়ার সংলগ্ন এলাকা, সেলবরষ ইউনিয়নের মির্জাপুর, সদর ইউনয়িনের আতকাপাড়া ফিশারী, কাবিলখাঁ নোয়াগাঁও, সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘুলুয়া, সিংধা ইউনিয়নের খাইদ্দ্যালী, ধর্মপাশা গ্রামের পুরকায়স্থ বাড়ি পুকুর ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলে মাদক বিক্রি ও সেবন। রাত যত ঘনিয়ে আসে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীরা ততই সক্রিয় হয়। তারা বিভিন্ন পয়েন্ট ধরে উপজেলা সদরে মাদক সরবরাহ করে। রাত বিরাতে মোটরসাইকেলে করে অসংখ্য মাদক ব্যবসায়ী উপজেলা সদরে প্রবেশ করে। এতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে চুরি ছিনতাই বেড়েছে। মাদকের অবাধ ছড়াছড়ির কারণে উঠতি বয়সের তরুণেরা বিপথগামী হচ্ছে। নেশাগ্রস্থ হয়ে সংঘবন্ধ তরুণেরা পরিণত হচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ে। সম্প্রতি ধর্মপাশায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। রাতে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়ে যায়। কথিত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপরিচিত কাউকে দেখলেই পথ আগলে দাঁড়ায়। আর সংঘঠিত করে ছিন্নাইতের মতো জঘন্য অপরাধ। পথচারীরা তাদের সাথে থাকা মূল্যবান জিনিস দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ছুরি, ক্ষুরসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ফলে রাতে প্রতিটি সড়কই হয়ে উঠে বিপদজনক।
ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের ধর্মপাশা পুরকায়স্থ বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আফজালুর রহমান আজাদ বলেন, পুরকায়স্থ বাড়ির পুকুর পাড় মাদকের একটি হিট পয়েন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ধ্যার পুকুড় পাড়ে ও লিচু গাছের তলায় অপরিচিত লোকদের দেখা যায়। রাতে বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে প্রচুর মোটরসাইকেল চলাচল করে। মনে হচ্ছে ওইসব মোটরসাইকেলে করে মাদক পরিবহন করা হয়।
সুখাইড় রাজাপুর উত্তর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন তালুকদার বলেন, ধর্মপাশায় এখন মাদকের অবাধ ছড়াছড়ি। এতে করে উঠতি বয়সের তরুণেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা অবাধে বাজারে ঘুরাফেরা করছে। কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়েছে। কিশোর গ্যাং বেপরুয়া হয়ে গেছে। মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস বলেন, ‘মামলায় জড়িত যে সকল মাদক ব্যবসায়ীরা এতোদিন লুকিয়ে থাকতো তারা হঠাৎ করে প্রকাশ্যে এসে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়েছে। মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতায় যে কোনো সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের খুঁটির জোর কোথায়? কাদের ছত্রছায়ায় থেকে থেকে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালাচ্ছে তা দ্রæত সময়ের মধ্যে বের করে মাদক নিমর্ূূলসহ এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নেই। ধর্মপাশায় কোনো মাদক নেই।
শেয়ার করুন