সারাদেশের ন্যায় বছরের প্রথম দিনে সুনামগঞ্জে পালিত হয়েছে বই উৎসব। বছরের শুরুতে বই নিতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। তবে সবাই একটি দুটি করে বই পেলেও জেলার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থী বই পায়নি। বই উৎসবে এসে বই না পেয়ে হতাশ হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছে শিক্ষার্থীরা।
এতে বছরের প্রথম দিনের বই উৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে শিশুরা। কবে বই পাবে সেই আশ্বাসও দেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সঠিক সময়ে বই না পেলে পড়াশুনার দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা করছেন অভিভাকরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১১ উপজেলার মোট চাহিদার ৩৫ ভাগ বই পাওয়া গেছে। প্রথম শ্রেণির জন্য ২ লাখ ৫৯ হাজার ২১৫ টি ও দ্বিতীয় শ্রেণির ২ লাখ ৫০ হাজার ৪৫৫টি বইয়ের মধ্যে একটি বইও পাওয়া যায়নি। এছাড়াও জেলার সদর, দোয়ারাবাজার, বিশম্ভরপুর, ছাতক ও তাহিরপুর উপজেলার প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির কোনো বই বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বই উৎসবের জন্য আশপাশের উপজেলাগুলো থেকে বই আনা হয়েছে।
শহর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সালুয়া সামস ওয়ার্দির বাবা আব্দুল হালিম বলেন, এর আগে বছরের শুরুতে বই পেয়েছি। এবারও বই নিতে মেয়েকে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসলাম কিন্তু কোনো বই পাইনি। কবে পাব তাও বলতে পারেন না কর্তৃপক্ষ।
একই শ্রেণির তাসনিয়া তাবাসসুম এর অভিভাবক পলাশ আহমেদ বলেন, প্রত্যেক বছর বছরের শুরুতে বই পেলেও এবার খালি হাতে বাচ্চাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছি। সঠিক সময়ে বই না পেলে বাচ্চারা পিছিয়ে পড়বে।
আজ রোববার (১ জানুয়ারি) সকালে সুনামগঞ্জের শহর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শেখ মহি উদ্দিন, সহকারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুব জামান, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুর রহিম বাবর।
বই উৎসব শেষে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান বলেন, যতদূর জেনেছি কাগজ সরবরাহের ঘাটতি থাকায় যথাসময়ে বই ছাপতে দেরি হওয়ার কারণে আমরা চাহিদা মতো বই পাইনি। চাহিদার ৩৫ শতাংশ বই এসেছে সুনামগঞ্জে। তার মধ্যে ৫টি উপজেলায় কোনো বই আসেনি। বই উৎসব পালন করার জন্য অন্যান্য উপজেলা থেকে বই আনা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোনো বই এখনও সুনামগঞ্জ জেলায় পাইনি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহতি করেছি। আশা করছি আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সবাই সব বই পেয়ে যাবে।
শেয়ার করুন