বিশ্বব্যাপী একই তারিখে রোজা ও ঈদ পালনের আহ্বান

ইসলাম ও জীবন

রোজা ও ঈদ পালনে ‘চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল’ কথাটা অনাবশ্যক ও ত্রুটি সৃষ্টিকারী। সেজন্য ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সর্বোচ্চ ফিক্‌হ একাডেমির নেওয়া সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরি তারিখ বাংলাদেশেও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে মুসলিম উম্মাহ ট্রাস্ট।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়েছে।

হিজরি ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম শমশের আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কর্নেল (অব.) জি.র.মো. আশরাফ উদ্দিন।

মুসলিম উম্মাহ ট্রাস্ট জানায়, বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় আকাশে চাঁদ দেখা গেলে সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে খবর পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে একই সময়ে রোজা ও ঈদ পালনে ইসলামী শরিয়তে কোনো বাধা নেই। তাই ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সর্বোচ্চ ফিক্‌হ একাডেমির নেওয়া সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরি তারিখ বাংলাদেশেও বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি দাবি জানায়।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, রোজা ও ঈদ পালনে ‘চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল’ কথাটা অনাবশ্যক ও ত্রুটির সৃষ্টিকারী।
বিশ্বের দেশে দেশে চাঁদ দেখার কোনো প্রয়োজন নেই। সমগ্র বিশ্বের কোথাও না কোথাও চাঁদ দেখা গেলেই চন্দ্র মাস শুরু হয়েছে বুঝতে হবে। যেভাবে আমরা কোরআনের নির্দেশ পালনের সহায়ক হিসেবে ঘড়িকে গ্রহণ করেছি, একইভাবে চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম নির্দেশের সহায়ক হিসেবে ‘আন্তর্জাতিক হিজরি ক্যালেন্ডার’কে অনুসরণ করতে পারি।

 

‌‘উত্তম পন্থা হাতের কাছে রেখেও যদি আমরা চাঁদ দেখার ত্রুটিপূর্ণ বা সীমাবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করি তাহলে তা আমাদের জেদ, অনৈক্য ও অজ্ঞতাকেই নির্দেশ করবে’ যোগ করেন বক্তারা।

তারা বলেন, আমাদের দেশের পূর্ব পশ্চিমের দেশগুলোতে চাঁদ দেখা গেলে তারা ঈদ পালন করল, আর আমরা চাঁদ দেখিনি বলে একসঙ্গে ঈদ পালন করতে পারলাম না। এটা অত্যন্ত লজ্জার এবং অজ্ঞতা। এমন কাজ শুধু উম্মাহর ঐক্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না বরং মুসলমানদের জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতির দাবিকে উপহাস করে। আকাশে একটি চাঁদ, তাই শুধু পার্শ্ববর্তী দেশ নয় যেকোনো দেশেই নতুন চাঁদ ওঠার অর্থ চন্দ্রমাস শুরু হয়ে গেছে। এ কারণে কোরআন-সুন্নাহ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোকে অসংখ্য ওলামা মাশায়েখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক একাডেমি সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, বিশ্বের সর্ব পশ্চিম প্রান্তে নতুন চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেলে উক্ত সংবাদ বিশ্বের পূর্ব প্রান্তে বসবাসকারী মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে পৌঁছালে কিংবা জ্যোতির্বিজ্ঞানের বদৌলতে পৃথিবীর আকাশে নতুন চাঁদ দৃশ্যমান হলে একই তারিখে সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে সিয়াম ও ঈদসহ চন্দ্র মাস কেন্দ্রিক সব ইবাদত পালন করতে হবে। বাংলাদেশে এক ও অভিন্ন পদ্ধতিতে চন্দ্রমাস উদযাপনের দাবি জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *