জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ সিলেট জেলা কমিটির উদ্যোগে বর্তমান উদ্ধুদ্ধ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় শীর্ষক কর্মীসভার মধ্য দিয়ে ১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত।
গতকাল ২৩ জুন’২৪ রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা মার্কেটস্থ সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে জেলা কমিটির অন্যতম নেতা রহুল আমিন-এর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখর সেন, শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি খোকন আহমদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, যুগ্ম সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ (শান্ত), সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মুহিদুল ইসলাম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুমিন রাজু, মীরের চক শ্রমজীবী সংঘের আহবায়ক আলী আহমদসহ প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ বলেন, সিলেটে বন্যা প্রায় নিয়মিত রূপ নিচ্ছে। গত ২ বছরে একাধিকবার বন্যার শিকার হয় নগরবাসী। এসকল বন্যাকে যদি প্রতিক্রিয়াশীলদের মত প্রাকৃতিক বন্যা হিসাবে দেখা হয় তাহলে আড়াল হবে বন্যার প্রকৃত কারণ এবং এর জন্য যারা দায়ি তারা রক্ষা পাবে জনরোষ থেকে। আবার লুটেরারা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর নামে বন্যা কেন্দ্রিক বরাদ্দকৃত ত্রাণ, নগদ অর্থ অধিকাংশ লুটপাট করে কিয়দংশ বিতরণের নামে নিজেদেরকে জনদরদি ও জনপ্রতিনিধি হিসাবে ক্ষমতায় থাকার এবং ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হিসাবে বন্যাকে কাজে লাগায়। সিলেট শহরে আশ্রয় কেন্দ্রে ১০ টন চাল, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শুকনা খাবার বরাদ্দের কথা বলা হলেও তা ভুক্তভোগীরা পাচ্ছেননা। সরকারি হিসাবে ত্রাণ মজুত পর্যাপ্ত দেখানো হলেও তা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে বাধ্য হয়ে অনেকে দূষিত পানি পান করছেন। এতে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা রয়েছে। সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় সরকারি মেডিকেল কলেজ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলায়ও পানি প্রবেশ করেছে। পর্যাপ্ত আশ্রয়ন কেন্দ্র না থাকায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন অনেকে। কাজ না থাকায় কষ্টে আছেন দিনমজুররা।
বক্তারা আরোও বলেন, ২০২২ সালে সিলেট জেলা সহ বিভাগে ব্যাপক ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল তবুও পানি নিষ্কাশনে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় এবার জনগণকে চরম দুঃখ-কষ্ট ভোগসহ মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। বন্যা সমস্যা সহ যেকোনো জাতীয় সমস্যায় তাৎক্ষণিক সরকারের বিভিন্ন প্রতিশ্রæতি থাকলেও পরবর্তীতে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়না।
সাম্রাজ্যবাদের দালাল ভারত সরকার কর্তৃক আন্তর্জাতিক নদী আইন ও পানি প্রবাহের প্রাকৃতিক নিয়ম উপেক্ষা করে একতরফাভাবে ফারাক্কাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে চলেছে। যে কারণে সারাদেশসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদী ভরাট হয়ে বন্যা, জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা, আর্সেনিক দূষণসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
সভা থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লক্ষ লক্ষ মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ-প্রণোদনা প্রদানসহ বন্যা কবলিত মানুষের জানমাল রক্ষায় সরকারি উদ্যোগে আশ্রয়কেন্দ্র, চিকিৎসা ও নৌ-যোগাযোগের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
![](https://sylhetline24.com/wp-content/uploads/2024/06/E02869DD-149E-4973-B58A-389EEF3C1537.jpeg)