
সবশেষ ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল। এরপর গত ২২ বছর ধরে ভারতের বিপক্ষে জয় খরায় ভুগছিল বাংলাদেশ। হামজা চৌধুরী, শমিত সোমদের কল্যাণে অবশেষে সে দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবসান হলো। ভারতের বিপক্ষে কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ।এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ভারতকে ১-০ গোলে হারালো বাংলাদেশ। দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেছেন শেখ মোরসালিন। গোল না করলেও এদিন বাকি সব দায়িত্ব-ই পালন করেছেন হামজা দেওয়ান চৌধুরী।এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার স্বপ্ন আগেই শেষ বাংলাদেশের। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ-ই ছিল লাল সবুজদের জন্য। কারণ গত ২২ বছর ধরে এ দলটির বিপক্ষে জিততে পারছিল না তারা। মাঝে ১০ ম্যাচের মধ্যে ৬টি ড্র করলেও হেরেছিল ৪ ম্যাচে। সবশেষ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচে গত ২৫ মার্চে শিলংয়ে গোলশূন্য ড্র করেছিল দুদল।
ওই ম্যাচেও জয়ের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। তবে একাধিক গোল মিস করে হতাশ করেছিল আক্রমণভাগের ফুটবলাররা। আজকে অবশ্য সে হতাশা কেটেছে ম্যাচের শুরুতেই। দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে দলকে লিড এনে দিয়েছিলেন রাকিব হোসেন ও শেখ মোরসালিন জুটি। বাঁ পাশ থেকে রাকিবের বাড়ানো পাস ভারতের গোলকিপারের সামনে থেকে টোকা দিয়ে জালে পাঠান মোরসালিন। তাতে ১১তম মিনিটেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। আর এ গোলেই শেষ পর্যন্ত জয় পায় লাল সবুজরা। অবশ্য ম্যাচের বাকি সময়টা এ লিড ধরে রাখতে মাঠের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘাম ঝরিয়ে গেছেন হামজা। তার রক্ষণ কৌশলে বেশ কয়েকবার গোল হজম থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ।
ম্যাচের ৩১তম মিনিটের কথাই ধরা যাক। গোলরক্ষক মিতুল মারমার ভুলে গোল হজম করতে বসেছিল স্বাগতিকরা। মিতুল বার ছেড়ে অনেকটা বাইরে চলে গিয়েছিলেন। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে সে সুযোগে শট নিয়েছিলেন ভারতীয় মিডফিল্ডার লালিয়ানজুয়ালা। তবে বল লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগে হেডের সাহায্যে ক্লিয়ার করেন হামজা। রক্ষা পায় বাংলাদেশ।
শেয়ার করুন
এর মধ্যে ৩৪তম মিনিটে তপু বর্মণের সঙ্গে ভারতের বিক্রমের সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়। রেফারি তপু ও বিক্রম, দুজনকেই হলুদ কার্ড দেখান। ৪৪তম মিনিটে বাংলাদেশকে প্রায় দ্বিতীয় গোলটি এনেই দিয়েছিলেন হামজা। কিন্তু বক্সের ঠিক বাইরে থেকে তার নেয়া জোরালো শটটি অল্পের জন্য জালে জড়ায়নি। শেষমেশ ১-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে টানা আক্রমণ চালাতে থাকে ভারত। প্রথমার্ধে আক্রমণে ধার থাকার পরও কোচ হাভিয়ের কাবরেরা বিরতির পর রক্ষণাত্মক খেলার কৌশল সাজান। তাতে ঘন ঘন আক্রমণের সুযোগ পেয়ে যায় ভারত। তবে হামজা এবং তার সতীর্থরা বারবার রুখে দেন প্রতিপক্ষে আক্রমণ। ৬৯তম মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন জায়ান আহমেদ। ৭০তম মিনিটে তুলে নেয়া হয় মোরসালিনকে। দুজনের বদলি হিসেবে নামেন তাজ উদ্দিন ও শাহরিয়ার ইমন। আক্রমণের পর আক্রমণে সামলাতে ব্যস্ত বাংলাদেশ ৭৯তম মিনিটে আক্রমণে উঠে গোলের সুযোগ পেয়েছিল। তবে বক্সে ঢুকেও ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি শাকিল আহমেদ তপু। তার নিচু শট সরাসরি চলে যায় ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রিত সিং সান্ধুর হাতে।
শেষ পর্যন্ত ভারত গোলের চেষ্টা চালিয়ে যায়। আর বারবার বল ক্লিয়ার করে জাল অক্ষত রাখে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। শেষ পর্যন্ত তুলে নেয় কাঙ্ক্ষিত জয়।
সবশেষ ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে যোগ করা সময়ে মিডফিল্ডার মতিউর রহমান মুন্নার গোল্ডেন গোলে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।



