বিশ্বনাথে যুবলীগ নেতা মুহিবের উপর হামলা

সিলেট

ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটের বিশ্বনাথে পৌর শহরের নতুনবাজারস্থ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসায় ফেরার পথিমধ্যে হামলার আহত হয়েছেন উপজেলা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট।

শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে পৌর শহরের আরামবাগ আবাসিক এলাকার গেইটের সামনে ঘটনাটি ঘটে।
রাতের আধাঁরে সন্ত্রাসী হামলায় আহত যুবলীগ নেতা মুহিবকে প্রথমে স্থানীয় একটি ডায়গনেস্টিক সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা গ্রহন শেষে গতকাল শনিবার বিকেলে বাসায় ফিরেছেন মুহিব।
এরপূর্বে যুবলীগ নেতা মুহিবকে দেখে হাসপাতালে ছুটে যান জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার রাতে ঘটনার পর পরই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কদর আলী সেলফোনে যুবলীগ নেতা রাজু আহমদ খানকে কল করে মুহিবের উপর হামলা করার সত্যতা স্বীকার করে হুমকি প্রদান করে। এরপর পৌর শহরের পুরাণবাজার এলাকা থেকে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিয়ে বিএনপি নেতা কদর ও তার পুত্র ইমনকে ধরে উত্তম মাধ্যম দিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করেন। এরপর পুলিশ কদরের পুত্র ইমনের ব্যবহৃত মোটর সাইকেল জব্দ করে।

এব্যাপারে বিশ্বনাথ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রফিক আলী জানান, রাত ১০.১৫ মিনিটের দিকে যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট নতুন বাজাস্থ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মোটর সাইকেল যোগে ছোট ভাই মাহফুজুর রহমান সুয়েবকে সাথে নিয়ে বাসায় ফির ছিলেন। তারা পৌর শহরের নতুন বাজারস্থ আরামবাগ আবাসিক এলাকার গেইটের সামনে পৌঁছামাত্র পিছন দিক থেকে একটি হলুদ কালারে একটি মোটর সাইকেলে ২জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী তাদেরকে অভারটাইক করে। তখন ওই ওই মোটর সাইকেলের আরোহীদের মধ্যে ১ জনের মাথায় হেমলেট ও অপরজনের মুখে মাস্ক পড়া ছিলো। মোটর সাইকেলটি অভারটাইক করার সাথে সাথে মাস্ক পড়া লোকটি যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইটকে টার্গেট করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপ দেয়, কুপটি মুহিবের মুখের ডান পাশে পড়ে রক্ষাক্ত জখম হয়। এতে প্রাণে রক্ষাপ্রাণ মুহিব।

উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক পদ প্রত্যাশী যুবলীগ নেতা রাজু আহমদ খান বলেন, বিশ্বনাথ উপজেলায় হলুদ কালারের মোটর সাইকেল নেই বললেই চলে। এই কালারের একটি মাত্র মোটর সাইকেল রয়েছে, যার মালিক উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কদর আলীর পুত্র ছাত্রদল নেতা ইমনের। তাই ঘটনার পর রাত ১১টার দিকে ছাত্রদল নেতা ইমনকে মুঠোফোনে কল দিয়ে আহত মুহিবুর রহমান সুইটের রাজনৈতিক সহকর্মী যুবলীগ নেতা রাজু আহমদ খান তার (ইমনের) কাছে জানতে চান ঘটনার সময় তার (ইমন) ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি ইমনের কাছে ছিলো, কি না।

প্রতি উত্তরে ইমন জানান গাড়িটি তার বাবা কদর আলীর কাছে রয়েছে। রাজু তখন ইমনকে বলেন ‘ভাগনা তুমি তুমার বাবার কাছে জিজ্ঞেস করো আজকে তুমার গাড়িটি অন্য কোন লোক নিয়েছে কি না’। রাজু-ইমনের ফোনালাপের কিছুক্ষণ পর যুবলীগ নেতা রাজুকে কল করেন বিএনপি নেতা কদর আলী। এসময় বিএনপি নেতা কদর অকথ্য ভাষায় যুবলীগ নেতা রাজুকে গালিগালাছ করে বলতে থাকে ‘মুহিবকে আমি মেরেছি। কারো ক্ষমতা আছে কি, আমাকে কিছু করার। যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে আসো আমি রিফাতের সামনের আছি’। কিছুক্ষণ পরই রাজুসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী রিফাতের সামনে পৌঁছান। ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের দেখেই বিএনপি নেতা কদর আলী ও তার পুত্র ছাত্রদল নেতা ইমন মোটর সাইকেলে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। তখন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে পৌর শহরের পুরাণবাজারের থেকে বিএনপি নেতা কদর ও তার পুত্র ইমনকে ঝাপটে ধরে মারধর করেন। ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে গেলে ‘কদর ও ইমন’কে পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়। এরপর পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

বিএনপি নেতা কদর আলী ও তার পুত্র ইমনকে পুলিশের কাছে সোর্পদ করার এবং ইমনের মোটর সাইকেল জব্দ করার সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ গাজী (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *