ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিপুল ভোটে পাস হয়েছে।
শুক্রবার আরব দেশগুলোর পক্ষে সাধারণ পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবটি তোলে জর্ডান। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে সাধারণ পরিষদের ১২০ সদস্য। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৪ সদস্য। অপর দিকে ৪৫ সদস্য ভোটদানে বিরত ছিল।
সাধারণ পরিষদে তোলা উত্থাপিত প্রস্তাবটিতে গাজায় অবিলম্বে একটি টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ সরবরাহ নিরাপদ করা, অঞ্চলটির উত্তরাংশের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার ব্যাপারে ইসরায়েলের নির্দেশ বাতিল করা, এই যুদ্ধে সব বেসামরিক জিম্মিকে মুক্ত করার কথা বলা হয়। প্রস্তাবটিতে সরাসরি হামাসের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
ভোটের আগে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, ‘এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অর্থ এই অর্থহীন যুদ্ধ, এই বুদ্ধিহীন হত্যাকাণ্ডকে অনুমোদন করা।’ অন্যদিকে, ইসরায়েল ভোটের এই ফলাফলকে ‘কলঙ্কজনক’ বলে নিন্দা করেছে।
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতি মানে হামাসকে আবার অস্ত্রে সুসজ্জিত হওয়ার জন্য সময় করে দেওয়া। এই ভোটের উদ্দেশ্য শান্তি আনা নয়, এর অর্থ ইসরায়েলের হাত বেঁধে রাখা।’
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব মেনে চলার ব্যাপারে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য হওয়ায় গৃহীত প্রস্তাবগুলোর নৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রবেশ করে ১ হাজার ৪০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক মানুষকে বন্দী করে। এর পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে গাজা শহরের বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েল। এই হামলায় প্রায় সাড়ে ৭ হাজারের মতো সাধারণ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনির বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গত দু’সপ্তাহ ধরেই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে আলোচনা চলছে। গাজায় মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এনেছিল রাশিয়া ও ব্রাজিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আপত্তিতে সেগুলো পাস করা যায়নি। এরপর গত বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে দুটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একে অপরের প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় কোনোটিই পাস করা সম্ভব হয়নি।