গোলাপগঞ্জে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত তাজ উদ্দিনের স্ত্রী রুলি বেগম (২৮) বাদি হয়ে বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে ২৮ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২০ জনকে আসামি করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় এ হত্যা মামলায় দায়ের করেন। তাজ উদ্দিন হত্যা মামলায়ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও এ সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে গোলাগঞ্জে ৬টি হত্যা মামলা দায়ের করা হলো। সবক’টি মামলায় প্রধান আসামি হয়েছেন সাবেক এমপি নাহিদ।
তাজ উদ্দিন হত্যা মামলায় নাহিদ ছাড়াও এজাহারনামীয় অপর আসামিরা হলেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, (৬০), কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন (৫৫), উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর ফখর (৪৫), কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম সুয়েব (৫৫), আওয়ামী লীগ নেতা গুলজার হোসেন (৪৫), দক্ষিণ সুরমার সাইদুল ইসলাম (৩৮) ও সাহেদ আহমদ (৩২), লিটন আহমদ (৩৫), আমুড়ার কামাল মিয়া (৪৫), উপজেলার শেরপুরের হাবিবুর রহমান (৪৫) ও শাকিল আহমদ (৩৫), বাঘা সোনাপুরের সুরমান আলী (৫৫), হাজিপুরের বদরুল ইসলাম (৪৫), কায়স্তগ্রামের মনসুর আহমদ (৩৭), জকিগঞ্জের কসকনকপুরের নজরুল হক তফাদার (৪৫), বুধবারিবাজরের আবজাল হোসেন (৪০), চন্দরপুরের হাসান আহমদ (৩৪), কায়স্তগ্রামের কবির আহমদ মেম্বার (৪০), হাবিবুর রহমান শোভন (৩০), শরীফগঞ্জের দুলাল আহমদ (৪০), ইসলামপুরের রাসেল আহমদ (৩৫), খাটকাইয়ের এনামুল হক এনাম (৩৫), জইন খান (৩০), জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), জসিম উদ্দিন (৪০),আজিজুর রহমান (৫০), নাহিদ আহমদ (৩০)।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ নিয়ে থানায় মোট ৬ টি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, হাসিনা সরকার পতনের আগের দিন (৪ আগস্ট)গোলাপগঞ্জ উপজেলাজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি এবং সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রাণ হারান শীলঘাট গ্রামের কয়ছর আহমদের ছেলে ছানি আহমদসহ ৬জন। এছাড়াও সিলেটে পুলিশের গুলিতে নিহত হন গোলাপগঞ্জের আরেকজন।
এর মধ্যে গোলাপগঞ্জের রায়গড় এলাকার ওয়াহিদ আলীর ছেলে কয়ছর আহমদ বাদি হয়ে ছানি আহমদ হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে ২০৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা (১২(০৮)২০২৪ দায়ের করেন। এ মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১১৮ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে আরও ৮০/৯০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
একইদিন (২৭ আগস্ট) দুপুরে অপর মামলা করা হয় সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ। গোলাপগঞ্জ উপজেলার রায়গড় গ্রামের ছুরাই মিয়ার ছেলে মনোয়ার মিয়া দায়েরকৃত দর্জি দোকানী জয় আহমদ (১৮) হত্যা মামলায় ৬৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতানামা ৩০০ জন আসামি করা হয়।
এছাড়া নিহত মিনহাজ আহমদের ভাই সাঈদ আলম বাদি হয়ে ৫৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০০/১৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
একইভাবে নিহত নাজমুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা মাহিনুরের দায়েরকৃত মামলায় ১১৯ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০০/১১০ জনকে আসামি করা হয়।
২৩ আগস্ট নিহত গৌছ উদ্দিনের ভাতিজা রেজাউল করিম ৩৮৪জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।এ মামলায় ১৩৪ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০/২৫০ জনকে আসামি করা হয়।
শেয়ার করুন