পালিয়ে যাওয়া চাচীর দায় আমাদের উপর চাপিয়ে বসতভিটা দখলের পাঁয়তারা!

সিলেট

ডেস্ক নিউজ:

জমিজমা-সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রভাবশালীদের ভয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী এক পরিবার। এই অবস্থায় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেছেন তারা। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সিলেট বিভাগীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তারা। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ৮নং তিলপাড়া ইউনিয়নের পিরেরচক গ্রামের হরমুজ আলী’র মেয়ে সোমনা বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী সালেহ আহমদ, শাহেদ হোসেন ও তার স্ত্রী, বৃদ্ধ পিতা-মাতাসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

লিখিত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শাহেদ আহমদ বলেন, পালিয়ে যাওয়া চাচীর দায় আমাদের পরিবারের উপর চাপিয়ে বসতভিটা দখলে পাঁয়তারা করছেন তার আপন চাচা মঈন উদ্দিন। এসময় বলেন, আমি একজন সিএনজি চালক, বিগত দুই বছর থেকে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় আমার নানার বাড়ীতে থেকে সিএনজি চালিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করি এবং মাঝেমধ্যে বাড়ীতে এসে মা-বাবা ভাই-বোনকে দেখাশোনা করি। বিগত দেড় বছর আগে আমার চাচা মঈন উদ্দিনের স্ত্রী জোসনা বেগম (৩৭) পরকীয়ার টানে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনা মিয়ার নেতৃত্বে একটি সালিশ বোর্ড গঠিত হয়। একাধিক বৈঠকে বিভিন্ন আলোচনার একপর্যায়ে পরকীয়ার টানে পালিয়ে যাওয়া স্ত্রীর দায় আমাদের উপর ফেলতে লিপ্ত হন আমার চাচা মঈন উদ্দিন।
এসময় জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টির সাথে তার স্ত্রী জোসনা বেগম পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে আমাদের বসতভিটা দখলের পাঁয়তারা শুরু করেন। মঈন উদ্দিন সালিশ বোর্ডের কাছে দাবি করে আমার স্ত্রী পালিয়ে যেতে আমাদের পরিবার সহায়তা করেছে এবং নানান ভাবে দোষারোপ করেন। ২৫ নভেম্বর-২২ ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে সালিশ বোর্ডের সদস্যরা মামলা-হামলাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করে একটি সাদা (অলিখিত) কার্টিজ পেপারে আমার ও আমার ভাই সালেহ আহমদ স্বাক্ষর নেন। এমনকি স্বাক্ষর নেওয়ার সময় আমার যৌবতী বোন স্বাক্ষর দিতে সময় বিলম্ব হওয়া মেম্বারের নির্দেশে তার ওপর হামলা করে কথিত ব্যক্তিরা। এরপর একাধিক বার স্থানীয় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে ও দিকনির্দেশনায় আমাদের উপর হামলা করা হয়।
শাহেদ আহমদ সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, গত ২৭ নভেম্বর আমি মৌলভীবাজার-থ-১১-৬৪৭৭ গাড়ি নিয়ে বাড়িতে আসার পথে শহীর উদ্দিন, খোকন মিয়া, বাদশা মিয়া, আবুল মিয়া, জলাল মিয়া, রুহেল মিয়া, মারুফ মিয়া, শহিদ মিয়া, আফজাল মিয়া, আফছর মিয়া, জামিল উদ্দিন, লিলু মিয়াসহ অজ্ঞাত নামা কয়েকজন দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে রাস্তা ঘেরাও করে আমার উপর হামলায় লিপ্ত হয়। এসময় তাদেরকে দেখে রাস্তার উপর গাড়ি রেখে দ্রুত পালিয়ে গিয়ে প্রাণ রক্ষা করি। আমাকে না পেয়ে দুর্বৃত্তরা গাড়ি ভাঙচুর করে।
এভাবে একের পর এক নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে বিষয়টি বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মহোদয়কে অবগত করলে তিনি আদালতে মাধ্যমে মামলা দায়েরর পরামর্শ প্রদান করেন। এবং গত ৩০ নভেম্বর আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করি।
বর্তমানে মামলা উত্তোলনের জন্য দুর্বৃত্তরা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এতে বৃদ্ধ মা-বাবা ভাই-বোন ও পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। নিরুপায় হয়ে আজ আপনাদের দ্বারস্থ হয়েছি আপনাদের মাধ্যমে আমি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজির মহোদয় সহ সকলের কাছে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের এই হত দরিদ্র অসহায় পরিবারকে বাচাঁতে আপনাদের সহায়তা ও সহানুভূতি একান্ত প্রয়োজন জানান ভুক্তভোগী শাহেদ আহমদের পক্ষে সোমনা বেগম।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *