সারা দেশে জনসভা করার ঘোষণা বিএনপির

রাজনীতি

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, অবনতিশীল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলা ও দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিসহ বিভিন্ন জন দাবীতে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারী) থেকে রমজান শুরু হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে জেলা ও মহানগরে পর্যায়ক্রমে সভা-সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা এখন প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রয়েছে। যারা ৫ আগস্টের পরিবর্তনকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি এমন লোকদেরকে চিহ্নিত করতে না পারলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছে এবং ষড়যন্ত্রমূলক অডিও রেকর্ড প্রকাশের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একের পর এক উস্কানি প্রদান করছে। বলেন তিনি।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উস্কানিতে ইতোমধ্যে গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে গুপ্ত হামলা, ঝটিকা মিছিল ও গণসংযোগ শুরু করেছে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে রক্তপিপাসু আওয়ামী দুর্বৃত্তরা গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর নারকীয় আক্রমণ চালিয়েছে। ১৫ জনের বেশী গুরুতর জখম হয়েছেন।

তিনি বলেন, পতিত সরকারের গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর ফ্যাসিস্টদের নিয়ে ভার্চুয়ালী মিটিং করে বলেছেন, যে শহরে আমরা দিনের বেলা ঘুরতে পারি না সে শহরের কাউকে আমরা ঘুমাইতে দিব না। লীগের নয়া প্রোজেক্টের মাস্টারপ্ল্যানারদের একজন সে। এমন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীকে এখনো গ্রেফতার করতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতা।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইতিমধ্যে হাসিনার নির্দেশে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা। পুলিশের গাড়ি থেকে পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে।

গত ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যাকারী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের বিষয়ে যতোটা কঠোর হওয়া দরকার ছিল, উল্টো বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ পর্যন্ত গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের ৫৭২ জন নেতা ও তার দোসরদের জামিন হয়েছে। গণহত্যার মামলার আসামিরা কিভাবে জামিন পাচ্ছে, আমরা সরকারের কাছে সেটির স্পষ্ট ব্যাখ্যা জানতে চাই।

সচিবালয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা গিজগিজ করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পুলিশ-প্রশাসন-আদালতে তারাই সবকিছু করছে। অবিলম্বে ফ্যাসিস্টদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে আবারো হাসিনার দোসরদের পরাস্ত করা কঠিন হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *