কানাডার নাগরিক ও খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার অভিযোগে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন কানাডিয়ান শিখরা।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দেশটির তিনটি শহরে ভারতের কূটনৈতিক মিশনের বাইরে এসব বিক্ষোভ হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ আনার এক সপ্তাহ পর এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত ১৮ জুন কানাডার নাগরিক ও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেটিএফ প্রধান নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের পাঞ্জাবি অধ্যুষিত শিখদের ধর্মীয় উপাসনালয়ের পার্কিংয়ে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। দীর্ঘদিন ধরে তাকে খুঁজছিল ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। তার মাথার দাম ১০ লাখ রুপি ঘোষণা করেছিল ভারত।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান ট্রুডো। তিনি বলেন, “খালিস্তানি নেতা নিজ্জারের হত্যার সাথে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ পেয়েছে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।” তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ভারত।
রয়টার্স বলছে, নিজ্জারের হত্যার প্রতিবাদে সোমবার কানাডায় বিক্ষোভ করেন শিখরা। টরন্টোতে প্রায় ১০০ জন বিক্ষোভকারী ভারতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি সম্বলিত কার্ডবোর্ডে জুতা দিয়ে আঘাত করেন।
এছাড়া প্রায় ২০০ জন বিক্ষোভকারীও ভ্যাঙ্কুভারে ভারতীয় কনস্যুলেটের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন। অন্যদিকে রাজধানী অটোয়াতে ভারতীয় হাইকমিশনের (দূতাবাস) সামনে প্রায় ১০০ জন বিক্ষোভকারী জড়ো হন। এ সময় তাদের হাতে “খালিস্তান” লেখা হলুদ পতাকা ছিল।
ভারতের পাঞ্জাবের অন্যতম নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী শিখ সম্প্রদায়। যারা ভারত থেকে আলাদা হয়ে কথিত স্বাধীন রাষ্ট্র “খালিস্তান” প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে; যা “খালিস্তানি” আন্দোলন নামে পরিচিত। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই দলটিকে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।
নিজ্জার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ট্রুডোর অভিযোগ সামনে আসার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। উত্তেজনার একপর্যায়ে উভয় দেশ একে অপরের একজন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কানাডিয়ান নাগরিকদের ভিসা পরিষেবা স্থগিত করে ভারত।
এই পরিস্থিতিতে টরন্টো এবং অটোয়ায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কিছু বিক্ষোভকারী কানাডায় ভারতীয় হাইকমিশনার (রাষ্ট্রদূত) সঞ্জয় কুমার ভার্মাকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
শেয়ার করুন