গোয়াইনঘাটে ৩ প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারের গাফলতি-জনদুর্ভোগ চরমে : সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন

সিলেট

তানজিল হোসেন, গোয়াইনঘাট: সিলেটের গোয়াইনঘাটে কয়েকটি উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের গাফলতিতে চমম জনদুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। যাতায়াতের উন্নয়নে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় সমালোচনায় ফেলছে সরকারের এসব উন্নয়ন। শেষ পর্যন্ত উনাই হাওর ব্রীজের কাজ বাতিলের জন্য লিখেছেন উপজেলা প্রকৌশলী।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পিরিজপুর-সোনারহাট রাস্তার এলজিইডির আওতায় উনাই হাওরে ৬০মিঃ দীর্ঘ ব্রীজের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারীতে। কিন্তু এখন অব্দি কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় যানচলাচলের বিকল্প সড়কের কোন ব্যবস্থা না করেই পুরাতন ব্রীজ ভেঙে ফেলায় উত্তর গোয়াইনঘাটবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থা থানা সদরের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এলাকার শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির প্রচেষ্টায় একটি বিকল্প সড়ক নির্মাণ হলেও সামান্য বৃষ্টি আর পানির জন্য যানচলাচল বিঘ্নিত হয়। চালু হয় খেয়া পারাপার। ব্রীজটির ঠিকাদারের কাজের গাফলতিতে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ এখনও চলছে। এই ব্রীজ নির্মাণে সরকারের ৮ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয় হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, ঠিকাদার এখনও কাজের কাজ কিছই করতে পারেনি। ২/১দিন কাজ করলে আবার কয়েকদিন বন্ধ থাকে। জানা যায়, ব্রীজটির ঠিকাদারিত্ব পায় আল কামিল প্রোপাইটর।
উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৩০% কাজ হয়েছে। আমি কাজ বাতিলের জন্য লিখেছি।
এছাড়া এক কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে তোয়াকুল কুরিখলা-কান্দিগ্রামের (২০২১/২২ অর্থ বছরের) ১৬শ মিঃ দীর্ঘ রাস্তা কাজের রয়েছে ধীরগতি। ফলে কাজ এখনও শেষ হয়নি। আটলিহাই-নাইন্দা রাস্তা ৩ হাজার ৪ শত মিটার আরসিসি,বিসি ব্যয় দুই কোটিরও বেশি। এর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রুপালী কনস্ট্রাকশন, বরিশাল।

এলাকাবাসী জানান, বছরের প্রথম দিকে কাজের জন্য রাস্তাটি ভাঙা হয়। কাজে ধীরগতি থাকায় যাতায়াতে মারাত্মত জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীসহ জরুরী রোগী পরিবহন বিঘ্নিত হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, কাজ এই ক’দিন থেকে শুরু হয়েছে।

একই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গোয়াইনঘাট টু গুরকচি সাড়ে ৬ কিঃ রাস্তার কাজ শুরু করছিলো গত বছরের প্রথম দিকে। আজও শেষ হয়নি।এ ছাড়া কাজের মান নিম্নমানের হওয়ায় রাস্তার কার্পেটিং উঠতে শুরু করেছে বলে জানান এলাকাবাসী। উক্ত ঠিকাদার কার্পেটিংয়ের মালামাল গোয়াইনঘাট সদরের পাশে তৈরী করে গাড়ি দিয়ে ৪/৫ কিঃ মিঃ দূরে নিয়ে কার্পেটিং করায় রাস্তা মেরামতের উপকরণগুলো অনেকটা শীতল হয়ে পড়ে। দায়সারা ভাবে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হচ্ছে এমন অভিযোগ জনসাধারণের।

গোয়াইনঘাট সদরের পাশে যেখানে তার মালামাল রয়েছে সেখানে পূর্বের ভাঙা রাস্তা থাকায় যানচলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে রয়েছেন উদাসীন। ঠিকাদারের কাজে ধীরগতি, উদাসীনতা ও রয়েছে সুষ্ঠু তদারকির অভাব। এলাকাবাসী পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। মানুষের উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেলেও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ন করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *