বিশ্বনাথে যুবদল নেতা সফিকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ঘটনার মামলা, আটক ১: এলাকায় তোলপাড়

সিলেট

ফারুক আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি সফিক খানের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সফিক ইউনিয়নের প্রয়াগমহল গ্রামের মৃত ইদ্রিস খানের পুত্র।

ভিডিও ভাইরালের পর ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকা’র অভিযোগে উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সামছুল ইসলাম ও যুগ্ম আহবায়ক মুসলিম আলী স্বাক্ষরিক এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ‘সফিক খান’কে দলীয় পদ থেকে বহিস্কার করেন।

ব্লাক মেইল করে ভিডিও ভাইরাল করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে সদ্য বহিস্কৃত যুবদল নেতা সফিক খান বিশ্বনাথ থানায় অভিযোগ প্রদান করলে পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মঙ্গলগীরি গ্রামের জুনাব আলীর পুত্র সিরাজুল ইসলাম (২৫)’কে আটক করে।

অন্তরঙ্গ মুহুর্তের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় সদ্য বহিস্কৃত যুবদল নেতা সফিক খান বাদী হয়ে আটককৃত সিরাজুল ইসলামসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৯ (তাং ৯.০৬.২৩ইং)। মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন- দূর্লভপুর গ্রামের মৃত সিকন্দর আলী পুত্র রমজান আলী (২৫) ও মঙ্গলগীরি গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার পুত্র লায়েক মিয়া (২০)। এছাড়া মামলায় আরও অনেকেই অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করা রয়েছেন।

এদিকে নিজের অপকর্ম চাপা দিতে ও তার প্রতিপক্ষের কিছু মানুষকে হয়রাণী করতে ‘অন্তরঙ্গ মুহুর্তের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ঘটনা’য় সদ্য বহিস্কৃত যুবদল নেতা সফিক খান থানায় মামলা করেছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। এঘটনার আসল রহস্য উদযাটন ও সাধারণ মানুষ যাতে ওই মামলায় হয়রাণীর শিকার না হন সেজন্য থানা পুলিশসহ সরকারের সকল মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

মামলার লিখিত এজাহারে সদ্য বহিস্কৃত যুবদল নেতা সফিক খান উল্লেখ করেন, তার ব্যক্তিগত স্মার্টফোনে স্ত্রীর সাথে তার দাম্পত্য জীবনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত ছিল। সম্প্রতি স্থানীয় প্রীতিগঞ্জ বাজারস্থ তার দোকান থেকে ব্যক্তিগত ওই মোবাইল ফোনটি চুরি হয়। পরবর্তীরে চুরি হওয়া মোবাইল ফোনটি তিনি দোকানেই পেয়ে যান। তখন তিনি দেখতে পান তার মোবাইলে সংরক্ষিত স্ত্রীর সাথের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও নেই। গত ৪ জুন গভীর রাতে সফিক খানকে মুঠোফোনে কল করে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম জানায়, তার (সিরাজুল) কাছে সফিকের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও রয়েছে এবং এ বিষয়ে পরদিন তার (সিরাজুল) সাথে সরাসরি দেখা করে এবিষয়ে কথা বলতে বলে। পরদিন (৫ জুন) দুপুরে প্রীতিগঞ্জ বাজারে সিরাজুল ইসলামের সাথে সরাসরি দেখা করেন সফিক খান। তখন সিরাজুল ইসলামের সাথে ছিলেন অভিযুক্ত রমজান ও লায়েক। এসময় অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সফিকের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম। এতে অপারগতা প্রকাশ করেন সফিক খান। পরবর্তীতে গত ৬ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সফিক খানের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ভাইরাল করে দেয় অভিযুক্তরা। এতে সামাজিকভাবে ৩ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক সফিক খানের মান সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে বলে দাবী তার।

মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *