স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে বিতর্কিত-মাদক ব্যবসায়ীরাও, নগরীতে ঝাড়ু মিছিল

সিলেট

সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন পেয়েছে। অনুমোদিত কমিটিতে স্থান পেয়েছে নানা অপকর্মে জড়িতরা। এদের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীও রয়েছে। যারা মাদকসহ হাতেনাতে ধরা পড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।
এ নিয়ে তুমুল সমালোচনা চলছে দলের ভেতরেও। সেই সঙ্গে বিতর্কিতদের নিয়ে ঘোষিত নতুন কমিটির বিরুদ্ধে রাজপথে ঝাড়ু মিছিল করে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন আহবায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহŸায়ক পদে আবু সালেহ মো. তাহেরকে যুক্ত করা হয়েছে। আর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহŸায়ক কমিটিতে কামাল হাসান জুয়েলকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই রাত ৮টার দিকে নগরীর দরগাহ গেইট রাজারগলি ৩৯/১ বাসার সামনে থেকে ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী আবু সালেহ মো. তাহেরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৯। গ্রেফতারকৃত তাহের নগরীর পূর্ব পীরমহল্লা প্রভাতী/৭৬ বাসার নাজিম উদ্দিন আক্তারের ছেলে। অথচ মাদক ব্যবসাকে আড়াল করতে নিজেকে সমাজকর্মী দাবি করেন তাহের। ‘হেল্পিং হ্যান্ডি’ নামে সংগঠনের ব্যানারে করোনার সময় প্রবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সহযোগীতার টাকা মেরে দিয়ে মাদক সেবন ও ব্যবসা করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিজ বাসা ও রাজার গলিতে বন্ধুর বাসা থেকে মাদক বিক্রয় করেন। তার বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মারামারির অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলাও হয়। তবে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টুপি মাথায় দিয়ে নিজেকে ‘সাধু বাবা’ সাজার চেষ্টা করেন তিনি।

এদিকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীমের অনুসারী মাদকসেবী কামাল হাসান জুয়েল। শহরতলীর দক্ষিণ সুরমায় তার বাড়ি। স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আলোচিত মাদকসেবী কামাল হাসান জুয়েলকে করা হয়েছে সংগঠনটির জেলার আহবায়ক কমিটির সদস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজের পদ পাওয়ার বিষয়টি জানান দিয়েছেন মাদক মামলায় জেল খেটে বেরিয়ে আসা এই নেতা।

নেতাকর্মীর অনেকের অভিযোগ, কামাল হাসান মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। গত বছরের ৯ মে মাদকদ্রব্যসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন কামাল হাসান জুয়েল। জেল খেটে বেরিয়ে ফের রাজনীতির পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ও তার সক্রিয় থাকার অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। কামাল হাসান জুয়েলের বাড়িও একই উপজেলায়। যে কারণে যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা মালেকের প্রেসক্রিপশনেই একজন ‘মাদকসেবীকে’স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেওয়া হয়েছিল। এবার তাকেই রাখা হয়েছে জেলার আহবায়ক কমিটিতে। আর এই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে রাজপথে।

উল্লেখ্য, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি মঙ্গলবার রাতে অনুমোদন করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান।

গত ৯ অক্টোবর আব্দুল আহাদ খান জামালকে আহবায়ক, শাকিল মুর্শেদকে সদস্য সচিব ও মিফতাহুল কবীর মিফতাকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। মাত্র ১০ দিনের মাথায় আজ ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পুর্নাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়।

ঘোষিত কমিটির আহবায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, সদস্য সচিব শাকিল মুর্শেদ, যুগ্ম আহবায়ক মিফতাউল কবির মিফতা, আব্দুল মুনিম, আলী মোঃ নুরুল হুদা দিপু, দেলওয়ার হোসেন চৌধুরী, আহসান মাহবুব, তোফায়েল চৌধুরী উজ্জ্বল, আব্দুর রউফ, সৈয়দ সরোয়ার রেজা, এমদাদ বক্স, কাওসান মাহমুদ সুমন, টিটন মল্লিক, রায়হানুল হক, জাহাঙ্গীর মিয়া, সদস্যরা হলেন সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, আব্দুল জলিল, ফয়জুর রহমান শাকিল, মিছবাউর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন পারভেজ, ইমাম উদ্দিন, রজব আহমদ, আব্দুস সালাম আজাদ সাহেদ, হাসান হাফিজুর রহমান টিপু, সাজ্জাদুর রহমান, শেখ আব্দুল মনাফ, খন্দকার মনিরুজ্জামান মনির, সৈয়দ ওয়ালিদ আহমদ বিলাস, আলতাফ হোসেন টিটু, সালেক আহমদ, হাবিবুর রহমান, খন্দকার ফয়েজ আহমদ, রুমেল আহমদ রুশন, সাইদ মাহমুদ ওয়াদুদ, শিমুল আহমদ, হাবিবুর রহমান মিন্টু, মোঃ আশিক মিয়া, আমজাদ হোসেন, প্রভাষক মাকসুদ আলম, মোঃ আক্তার মিয়া, সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী লাহিন, সাইফুল আলম কোরেশি, সেলিম আহমদ, নুরুল ইসলাম রুহুল, আয়াত আলী প্রিন্স, কয়েস আহমদ, আব্দুল আমিন, ফাহিম আহমদ, আদিল আহমদ রিমন, দিহান আহমদ হারুন।

এছাড়া সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ১৮ অক্টোবর রাতে অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সম্পাদক। গত ৯ অক্টোবর মাহবুবুল হক চৌধুরীকে আহবায়ক, আফসর খানকে সদস্য সচিব ও আব্দুস সামাদ তুহেলকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। মাত্র ১০ দিনের মাথায় আজ ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পুর্নাঙ্গ আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়।

ঘোষিত কমিটির আহবায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, সদস্য সচিব আফসর খান, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সামাদ তুহেল, মাসুম ইবনে রাজ্জাক রুমেল, আবু আহমেদ আনসারি, আবু সালেহ মো. তাহের, মুমিনুল ইসলাম রাহি, আব্দুল হাসিম জাকারিয়া, রুনু আহমেদ, সৈয়দ আমির আলী, উসমান হারুন পনি, সায়াদ আহমদ সুজন, কামরুল হাসান, আজিজ খান সজিব, আবুল কালাম সাহেদ, সদস্যরা হলেন কামরুজ্জামান দিপু, বেলাল আহমেদ, দেওয়ান রেজা মজিদ, তছীর আলী, মিসবাহ আহমেদ জেহিন, জাকারিয়া মো. সালাউদ্দিন (শাকের), ফাহিম আহমেদ চৌধুরী, আবির হাসান মুহিন, দুলাল আহমদ, চমক দে পলু, সৈয়দ আমিরুল হক সলিট, মেহেদী মাহবুব সপু, সফিকুল ইসলাম, বিমল দেব, মিজানুর রহমান পাভেল, রায়হান আহমদ, রায়হান উদ্দিন রাজু, সোহেল রানা, জিয়াউর রহমান, ইকবাল হোসেন, মো. সামাদ হোসেন, সেলিম মিয়া, সোলেমান খা, গোলাম রাব্বানী, ইবনে জাহান তানভীর, গোলাম মুস্তফা, নুরুল হক মাসুম, সোহেল আহমদ, শামীম আহমদ চৌধুরী, রুম্মান আহমদ, হোসেন খান ইমাদ, সাফওয়ান আলম কোরেশি, সোবহান আজাদ, আব্দুস সালাম, মো. সালাউদ্দিন, কাউসার আহমদ রকি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *