ধন্যবাদ নিজেকে ‘দালাল’ বলা বিদেশমন্ত্রী! -রুমিন ফারহানা

মুক্তমত

বিদেশ মন্ত্রীকে আমি আরও ধন্যবাদ জানাই নানা আলোচনা সমালোচনা সত্ত্বেও নিজ বক্তব্যে অটল থাকার জন্য। তার এ বক্তব্য সরল মনে বা মুখ ফস্কে দেয়া হয়েছে নাকি তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন-এমন প্রশ্নে আব্দুল মোমেন ঢাকা টাইমসকে বলেন “আমি জেনে বুঝেই বলেছি। আমি আমার বক্তব্য থেকে সরছি না। আমি ভুল কিছু বলিনি।” সঙ্গে তিনি আরও যুক্ত করেন “আমি আরও বলবো। তাদের সহযোগিতা আমাদের দরকার।”

মানুষের কখনো কখনো সময় খারাপ যায়। আমরা বলি ‘চোরাবালিতে’ পড়া। এই চোরাবালিতে পড়লে নাকি দাপাদাপি করতে হয়না, চুপ থাকতে হয়। বিদেশমন্ত্রী যেদিন বললেন আমরা বেহেশতে আছি সেদিনই নিজের জন্য যথেষ্ট বিপদ ডেকে এনেছিলেন তিনি। ‘চোরাবালি’ না হলেও বিপদ খুব ছোট ছিল না। শেষমেশ সাংবাদিকদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেকে কিছুটা হলেও রক্ষার চেষ্টা করেন।,  ট্রু সেন্সে বেহেশত বলিনি। কথার কথা। কিন্তু আপনারা সবাই আমারে খায়া ফেললেন।’ কে কাকে খায়া ফেলছে সেই আলোচনায় না গিয়েই বলি করোনার ধাক্কায় মানুষ যখন বিপর্যস্ত, টিসিবি’র ট্রাকের পেছনে মানুষের সারি প্রতিদিনই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, কাজ হারিয়ে, বেতন কমে মানুষ যখন হিসাব কষছে সন্তানের জন্য দুধ নাকি মায়ের জন্য ওষুধ কিনবে, ঠিক তখনই হঠাৎ করে জ্বালানির দাম বাড়া যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। আর সেই ঘায়ের ক্ষততে লবনের ছিটার মতো আসলো বেহেশত প্রসঙ্গ। সেটাও এক রকম সামলে ফেলেছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু শেষ রক্ষা  হলো না। এইবার আর বিপদ না, হাত পা মেলে চোরাবালিতে ঝাঁপ দিলেন তিনি। এখন দেখার বিষয় একা ডোবেন নাকি দলবলসহ।

 

গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শহরের জেএম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দারুণ এক আবদার কিংবা কারও কারও মতে মিনতি করেন ভারত সরকারের কাছে। সেই আবদার মেটানোর জন্য যা যা করা দরকার তাও করতে হবে ভারতকেই। তিনি খোলাখুলি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্র্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।’  এই সেদিন পর্যন্ত সরকারি দলের মুখে আমরা শুনেছি তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ দলটি নাকি কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়, তাদের কাছে নালিশ জানায়, সরকারের সমালোচনা করে তাদের কাছে সমাধান চায়। আর সরকারি দল নাকি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে দেশের মানুষই তাদের একমাত্র শক্তি, ক্ষমতার উৎস। অথচ ২০০৩-২০০৪ সালে বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগের কথা যদি ছেড়েও দেই ২০১৪ সালের পর থেকে এই সরকারের বিদেশ নির্ভরতার কথা একটা শিশুও জানে। এমনকি রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন  কথাও প্রচলিত আছে যে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল ১/১১ সরকারের পর ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তারা নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্যদিয়েই ক্ষমতায় যেতে পেরেছিল।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ারস’ বইয়ে লিখেছেন, ২০০৮ সালে তৎকালীন বাংলাদেশের ডি-ফ্যাক্টো শাসক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ ভারত সফরে যান এবং তিনি নির্বাচনের পর নতুন সরকারের অধীনে চাকরি হারানোর ভয়ের কথা জানান প্রণব মুখার্জীকে। জনাব প্রণব মইন ইউ আহমেদকে আশ্বস্ত করেন যে, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে তার কোনো সমস্যা হবে না।   বাংলাদেশে নির্বাচনহীনভাবে ক্ষমতায় থাকা না থাকা নিয়ে কোন কোন দেশের কেমন নেপথ্য ভূমিকা আছে, সেসব নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা অনুমান, ফিসফাঁস, আলোচনা আছে। কিন্তু এটা একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে ২০১৪ সালের তথাকথিত নির্বাচনের আগে। ভারতে তখন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার। তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং দেশে আসেন নির্বাচনের আগে। বিএনপিসহ প্রায় সকল দল নির্বাচনে না থাকায় জাতীয় পার্টিকে যে কোনো মূল্যে নির্বাচনে এনে সেটাকে কিছুটা হলেও জায়েজ করার চেষ্টা করা হয়। মিস সুজাতা এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাকে শক্ত চাপ দেন নির্বাচনে অংশ নিতে, যা বৈঠকের পর এরশাদ মিডিয়ার কাছে ফাঁস করে দেন। এটা যে তৎকালীন ভারতীয় কংগ্রেস সরকারের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার অংশ ছিল, সেটা প্রমাণিত হয়েছে আরও পরে।      বাংলদেশের ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সালমান খুরশীদ। ২০১৫ সালে প্রকাশিত তার ‘দ্য আদার সাইড অব দ্য মাউন্টেইন’ বইয়ে তিনি যা বলেছিলেন, সেটা খুব স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে তার দল কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কতটা হস্তক্ষেপ করেছিল।

সে বইয়ে তার একটা উদ্ধৃতি এ রকম- “বাংলাদেশে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে রাজপথে একদিকে সরকার সমর্থক ও তরুণ উচ্চাকাঙ্ক্ষী জাতীয়তাবাদী (গণজাগরণ মঞ্চ) এবং অন্যদিকে কট্টর জামায়াতে ইসলামীর কদর্য সংঘাতের ঘটনায় প্রাথমিক সেসব ইতিবাচক লক্ষণগুলো গুলিয়ে যায়। আর সে সময় আমাদেরকে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ শিবিরের দিকে ঝুঁকতে হয়। ভারতের এটি বেছে নিতেই হয়েছে। এক্ষেত্রে অবস্থান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া এবং সেজন্য সুযোগ হারানোটা সত্যিই বিপজ্জনক ছিল।” ভারতের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলটি কী করছে সেটার চমৎকার এক প্রদর্শনী ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, আমার দেশে কিছু দুষ্ট লোক আছে, কিছু উগ্রবাদী আছে। আমার দেশ সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন না, আপনার দেশেও যেমন দুষ্ট লোক আছে, আমাদের দেশেও আছে। কিছুদিন আগে আপনাদের দেশেও এক ভদ্রমহিলা কিছু কথা বলেছিলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে একটি কথাও বলিনি। বিভিন্ন দেশ কথা বলেছে, আমরা বলিনি। এ ধরনের প্রটেকশন আমরা আপনাদের দিয়ে যাচ্ছি। সেটা আপনাদের মঙ্গলের জন্য, আমাদের মঙ্গলের জন্য। আমরা যদি একটু বলি, তখন উগ্রবাদীরা আরও সোচ্চার হয়ে আরও বেশি বেশি কথা বলবে। তাতে আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন হবে।

 

 

আমাদের স্থিতিশীলতা বিঘ্ন হবে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এমন কাজ করবো না, ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে এমন কোনো উস্কানি দেবো না, যাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমাদের প্রতিবেশী দেশে কিছু মসজিদ পুড়েছে। আমরা কোনোভাবে সেটা প্রচার করতে দেইনি। এর কারণ হচ্ছে কিছু দুষ্ট লোক আছে, কিছু জঙ্গি আছে যারা এটার বাহানায় আরও অপকর্ম করবে। আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করেছি। অনেকে আমাকে ভারতের দালাল বলে, কারণ অনেক কিছুই হয়, আমি স্ট্রং কোনো স্টেটমেন্ট দেই না।’ চারিদিকে যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ভীষণ তোলপাড় তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেটার ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, ‘ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে অনুরোধ আওয়ামী লীগ করে না, করেনি। শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকেও কাউকে এমন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। যিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) এ কথা বলেছেন, সেটা তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। সেটা আমাদের সরকারের বক্তব্য না, দলেরও না।’  বোঝাই যাচ্ছে, জনাব কাদের ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টায় নেমেছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে এটা তার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর গতকাল রাতে নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বসে অনেক আলোচনা-পরামর্শ করে ঠিক করেছে, এই ইস্যুতে কী বক্তব্য দেয়া হবে। কিন্তু শেষমেশ জনাব কাদের যে বক্তব্য দিলেন, এতে ড্যামেজ কন্ট্রোল তো হয়ইনি তিনি ড্যামেজ আরও বাড়ালেন, এটা বলছি কারণ, বিদেশ মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি নতুন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিলেন।

আমরা কি এটা বিশ্বাস করি, সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছাড়াই একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা মনে আসে, সেটাই বলে আসবেন? যেকোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য যা যা করার দরকার সেটা করতে ভারতকে অনুরোধ জানাতে কী তিনি পারেন একেবারে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে? আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী যদি সত্যিই সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ছাড়াই এমন অনুরোধ ভারতকে করে থাকেন, তাহলে সেটা কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে তার ভয়ঙ্করতম অপরাধ নয়? তার এই ‘ব্যক্তিগত’ বক্তব্য কি তার দলের গত কয়েক বছরের কার্যক্রম ও চিন্তাধারা থেকে ভিন্ন কিছু? যদি ভিন্ন কিছুই হয়ে থাকে (যা আমি মনে করিনা) প্রতিক্রিয়ায় কি তাকে বক্তব্যের পর মুহূর্তেই পদচ্যুত করা উচিত ছিল না কিংবা অন্তত পক্ষে একটা ব্যাখ্যা তলব?    একটা সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য কোনো না কোনো ভিত্তি লাগবেই। একটা অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যে সরকারটি ক্ষমতায় আসে, তার ভিত্তি হয় জনগণ। কিন্তু এদেশের মানুষ তাদের সকল ধরনের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা হারিয়েছে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই।  ২০১৪ সাল থেকে জনগণের ম্যান্ডেটহীন এই সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে এবং টিকিয়ে রেখেছে তাদের আন্তর্জাতিক কিছু মিত্র এবং দেশের ভেতর আমলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিরোধী দলকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে মামলা দেয়া থেকে শুরু করে হেন কোনো নির্যাতন নাই যা এই সরকারের সময় করা হয়নি। শুধু নিজের দেশের মানুষকে চাপে রাখা নয় সেই সঙ্গে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করে নানা ক্ষেত্রে কী ধরনের আচরণ এই সরকার করেছে সেটাও খুব স্পষ্ট বিদেশ মন্ত্রীর বক্তব্য থেকেই।

তবে যে যাই বলুক আমি মনে প্রাণে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই বিদেশ মন্ত্রীর সততাকে। দেশের মানুষ যেমন জানে তেমনি জানে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপি থেকে শুরু করে প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীরা কি করে তারা ১৪ সালের পর থেকে ক্ষমতায় এসেছে এবং এখনো টিকে আছে। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রীর মতো এত খোলামেলা প্রাঞ্জল ভাষায় কেউ একথা স্বীকার করেনি। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিজয়ী হওয়া দূরেই থাকুক, মোটামুটি সুষ্ঠু ভোট হলেও অল্প কয়েকটি আসন ছাড়া অন্যগুলোতে জেতা সরকারি দলের জন্য অসম্ভব। বিদেশ মন্ত্রীর কথায় এটি স্পষ্ট যে দেশের পুলিশ, প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনের অকুণ্ঠ আনুগত্যও যে তাদের আবার ক্ষমতায় আনতে বা রাখতে পারবে সেটি তারাও এখন আর বিশ্বাস করে না। সুতরাং তারই ভাষায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যে দেশের সঙ্গে আছে তাদের সরাসরি সহযোগিতা ছাড়া উপায় কি? বিদেশ মন্ত্রীকে আমি আরও ধন্যবাদ জানাই নানা আলোচনা সমালোচনা সত্ত্বেও নিজ বক্তব্যে অটল থাকার জন্য। তার এ বক্তব্য সরল মনে বা মুখ ফস্কে দেয়া হয়েছে নাকি তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন-এমন প্রশ্নে আব্দুল মোমেন ঢাকা টাইমসকে বলেন “আমি জেনে বুঝেই বলেছি। আমি আমার বক্তব্য থেকে সরছি না। আমি ভুল কিছু বলিনি।” সঙ্গে তিনি আরও যুক্ত করেন “আমি আরও বলবো।

তাদের সহযোগিতা আমাদের দরকার।” আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কোনো চ্যারিটি নয়। এখানে প্রতিটি দেশ যার যার স্বার্থ অনুযায়ী কাজ করবে, যার যার লাভ ক্ষতি হিসাব করবে সেটাই স্বাভাবিক। নিজ নিজ লাভ ক্ষতির সেই চুলচেরা হিসাবে সে কারণেই দেখা যায় আজ যারা পরম মিত্র কালই হয়তো তারা চরম শত্রুতে পরিণত হয়। ভারতের কাছ থেকে অন্যায্য সুবিধা নেবার বদলে এদেশের সরকারকে যদি ভারতকে বাংলাদেশের স্বার্থের বিপক্ষে গিয়ে কিছু দিতে হয় তার দায় ভারতের নয় বরং রাষ্ট্র বিরোধী, দেশ বিরোধী, জনস্বার্থ বিরোধী সেই সরকারের। বেশ কয়েকটি অতি আলোচিত কিন্তু অনিষ্পন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ ভারতের চোখে চোখ রেখে কেন কথা বলতে বা নিজের স্বার্থ বুঝে নিতে পারে না, সেটি বোঝা গেলতো এবার? ধন্যবাদ জনাব মোমেন; সবার জানা কিন্তু লুকিয়ে রাখা বিষয়টি খোলাসা করে স্পষ্টভাবে বলার জন্য, স্বীকার করার জন্য। সবার নিজেকে উন্মোচিত করার এই সৎ সাহস থাকে না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *