বিশ্বনাথ পৌরসভার বিরুদ্ধে ‘বাসিয়া’ নদী পরিষ্কার না করেই লক্ষ টাকার বিল উত্তোলনের অভিযোগ

সিলেট

স্টাফ রিপোর্টার:

সিলেটের  বিশ্বনাথে দীর্ঘদিন ধরে দখলে-দূষণে জর্জরিত ‘বাসিয়া’ নদীর ময়লা ও আবর্জনা পরিষ্কারের খ্যাত দেখিয়ে ‘বিশ্বনাথ পৌরসভা’ কর্তৃপক্ষ লক্ষ টাকারও বেশি টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাগজে কলমে নদী পরিস্কারের কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে ওই বিল উত্তোলন করা হলেও বাস্তবে ‘বাসিয়া’ নদী পরিস্কার করা হয়নি, বরং বাসিয়া নদীতে পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলে কর্তৃপক্ষ বাসিয়া নদীকে দূষিত ও ভরাট করছেন বলে অভিযোগ সচেতন মহলের।

জানা যায়, গত বছরের ৩০ মে থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ১৬ জন শ্রমিকের নামে দৈনিক ৪৫০ টাকা করে মজুরি বাবদ মোট ১ লক্ষ ২ হাজার ১৫০ টাকার বিল উত্তোলন করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। ৩৬নং অনুচ্ছেদের আলোকে মাসিক সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পিপিআর ২০০৮ এর ৮২(২) অনুচ্ছেদের আলোকে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী নাজির হোসেনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। এর আলোকে ১৪ জন শ্রমিক ১৫ দিন, ১ জন শ্রমিক ৯ দিন ও ১ জন ৮দিন’সহ মোট ১৬ জন শ্রমিক দৈনিক হাজিরা ৪৫০ টাকা হিসাবে বাসিয়া নদীর ময়লা পরিষ্কার করেছে। তবে বাসিয়া নদীর আশপাশ জনসাধারণ কেউই কোন শ্রমিককে বাসিয়া নদীর ময়লা পরিস্কার করতে দেখেন নি, বরং নদীতে পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলতে দেখেছেন। ইতিমধ্যে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেল একাধিকবার ভাইরালও হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিল উত্তোলনের বিষয়ে সত্যতা শিকার করে বিশ্বনাথ পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক মুত্তালেব হোসেন বলেন, বিভিন্ন বিল উত্তোলন করে সংশ্লিষ্ট শাখাকে দেয়া হয়। কাজ হয়েছে কিনা সেটা দেখার দ্বায়িত্ব আমার নয়, আমি লাইসেন্স শাখার দায়িত্বে আছি।
‘বাসিয়া’ নদীর ময়লা-আবর্জনা পরিস্কারের কোন  কাজ হয়নি দাবী করে বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ফজল খান বলেন, বাসিয়া পরিষ্কারের কাজ হলে আমার জানার কথা। বরং বাসিয়া নদীতে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদী ভরাট ও দূষিত করা হচ্ছে। এখন বৃষ্টি হওয়ায় নদীর নিচের কিছু ময়লা-আবর্জনা পানির স্রোতে ভেসে গেছে। পৌরসভা কর্তৃক বাসিয়া নদী পরিস্কারের নামে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি একটি বড় দূর্নীতির পর্যায়ে পড়ে বলে আমি মনে করি।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি শামীম আহমদ বলেন, বাসিয়া নদী পরিষ্কার করা হলে আমরা নিশ্চয়ই জানতাম বা দেখতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য পৌরসভা থেকে ডাস্টবিন দেয়া হয়েছে এবং এই ডাস্টবিনগুলোতে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ময়লা-আবর্জনাও ফেলেন, আর সেই ডাস্টবিনের ময়লা-আবর্জনা নিয়ে পৌরসভার লোকজন বাসিয়া নদীতে ফেলাছেন। যা সত্যিই দুঃখ ও লজ্জ্বাজনক একটি ব্যাপারে। ওই ধরনের দূর্নীতি সহ্য করার নয়, তাই এসব দূর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসন’সহ সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *